Black Fungus: রাজ্যে ক্রমশ থাবা বসাচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, আক্রান্ত বেড়ে ১০, মৃত ১
শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতলে আজ সকালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে
করোনা সংক্রমনের সাথে ভারতবাসীর কাছে নয়া আতঙ্ক ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস। গোটা দেশের মধ্যে এতদিন অব্দি মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটকে এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। এমনকি এই সমস্ত রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। কিন্তু সম্প্রতি জানা যাচ্ছে এই রোগ থাবা বসিয়েছে বাংলাতেও। এখনও অব্দি মোট ১০ জন বঙ্গবাসী এই মিউকরমাইকোসিস রোগের কবলে পড়েছে। এই রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন ভর্তি রয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালে। এছাড়া ৪ জন ভর্তি রয়েছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ চত্বরে ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজিতে। এছাড়া বাকি একজন বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ এবং ৩ জন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে ওই ১০ জনের মধ্যে ৩ জনের ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগ নিশ্চিত। আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা পার্থসারথি ১৯ দিন আগে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়া তার ডায়াবেটিস ১ রয়েছে এবং করোনা সারানোর জন্য তাকে স্টেরয়েড দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও বিশ্বনাথ হালদার এবং বাবুল মন্ডল নামক আরও দুই রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত হলে নিশ্চিত করা হয়েছে। কিছুদিন আগে কেন্দ্র সরকার এই রোগকে মহামারী আখ্যা দিলেও ততদিনে বাংলায় রোগটি তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। কিন্তু আস্তে আস্তে এই রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে যা যথেষ্ট উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
আসলে এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগটি কি? ডাক্তারি পরিভাষায় মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগটি হলো একটি অত্যন্ত গুরুতর ও বিরল ছত্রাক সংক্রমণ। ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ গোটা দেহে ছড়িয়ে পড়লে মৃত্যু অবধারিত। এই রোগের উপসর্গ হল অসাড় মুখ, একদিক নাক বন্ধ, চোখ ফোলা, ব্যথা, জ্বর, কাশি, মাথা যন্ত্রণা ইত্যাদি। এছাড়াও ত্বকের যে কোন জায়গায় আঘাত লাগলে সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। চিকিৎসকদের মতে যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের শরীরে এমনিতেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে। এর ফলে তাদের শরীরের সবচেয়ে বেশি করে এই ছত্রাক সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজ সকালে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল থেকে এক তরুনীর মৃত্যু হয়েছে যার করোনা সংক্রমণ এবং ব্ল্যাক ফাঙ্গাস দুটি রোগ ছিল। হরিদেবপুরের বাসিন্দা শম্পা চক্রবর্তী করোনা আক্রান্ত হলে তাকে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর সেখানে জানা যায় ওই মহিলার করোনার সাথে সাথে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগও হয়েছে। বিষয়টি ধরা পরলে মহিলার অ্যান্টি ফাঙ্গাল ট্রিটমেন্ট শুরু হয়। কিন্তু ততক্ষণে তার সংক্রমণ মস্তিষ্ক, চোখ, চোয়াল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করে দিয়েছিল। এছাড়াও ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার ভোরে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।