লকডাউনে আটকে ছেলে, ভিন্ন রাজ্য থেকে স্কুটি চালিয়ে ছেলেকে ফিরিয়ে আনলেন সাহসী মা
শ্রেয়া চ্যাটার্জি – গোটা বিশ্ব জুড়ে করোনা আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়েছে মানুষ। ভারতবর্ষেও করোনা ক্রমশ থাবা বসাচ্ছে একে-একে। ক্রমশ বেড়েই চলেছে মৃত্যুর সংখ্যাসহ আক্রান্তের সংখ্যা। সরকারের তরফ থেকে হঠাৎ করে লকডাউন ঘোষণা করায় বিপদে পড়েছেন অনেকেই, বিশেষ করে যে সমস্ত শ্রমিক-কর্মচারীরা নিজ বাসভূমি ছেড়ে অন্যত্র গিয়েছিলেন জীবিকার সন্ধানে, তারা হঠাৎ করে লকডাউনের ঘোষনাতে ফিরতে পারেননি বাড়িতে। তাই অনেকে বাড়ি ফেরার জন্য মাইলের পর মাইল হেঁটে হেঁটেও বাড়িতে ফিরেছেন।
এই সময়ে মায়ের প্রাণও কেঁদে ওঠে। তাই ১৪০০ কিলোমিটার পথ তিনদিন ধরে স্কুটি চালিয়ে ছেলেকে বাড়ি আনলেন এক ৪৮ বছরের বৃদ্ধ মা। অন্ধপ্রদেশের নেল্লোরে আটকে পড়ে তার তরুণ সন্তান, এই দেখে মা কি পারেন বাড়িতে বসে থাকতে? পেশায় শিক্ষিকা রাজিয়া বেগম তাই একাই স্কুটি চালিয়ে চলে গেলেন ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে। প্রথমে ভেবেছিলেন বড় ছেলেকে দিয়ে আনতে পাঠাবেন, কিন্তু কোন ভাবে বড় ছেলেকে যদি পুলিশ মারধর করে সেই ভয় পেয়ে তিনি নিজেই স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন।
গত মাসের ১২ তারিখে তার সন্তান নিজামুদ্দিন নেল্লোর এ যান সেখানে গিয়ে আটকে পড়েন। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করলে নিজামুদ্দিন মাকে জানায় যে সে বাড়ি ফিরতে চায়। ছেলের এমন আকুতি-মিনতি শুনে মায়ের প্রাণ কেঁদে ওঠে। পনেরো বছর আগের স্বামীকে হারানো বিধবা, লড়াকু মা তাই একাই বেরিয়ে পড়েন ছেলেকে উদ্ধার করতে। অবশেষে তিনি সফল হন। করোনা ভাইরাস আমাদের আরেকটি ভালোবাসার সাক্ষী হতে সাহায্য করল। গোটা বিশ্ব জুড়ে এই অসম সাহসী, বিধবা মায়ের জয় জয়কার।
কথাতেই আছে ‘কুসন্তান যদিও বা হয়, কুমাতা কখনো নয়’, নারীদের মাতৃত্ব হলো সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পর্যায়। শুধু মানুষ নয় পশু, পাখি, সমস্ত ক্ষেত্রেই মাতৃত্ব এক মহান পর্যায়। হাজার খারাপ পরিস্থিতিতেও মা কখনো তার সন্তানকে ছাড়তে পারে না। যথাসম্ভব আগলে রাখার চেষ্টা করে। তবে বর্তমান সমাজে নানান রকম ব্যাতিক্রম উদাহরন ও দেখা যায়। সেগুলি বাদ দিয়ে, মাতৃত্বের জয়গাঁথা বর্নিত সর্বত্রই।