বেশ কয়েকদিন ধরে শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা। দিন কয়েক আগে অভিযোগ উঠেছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যে মহিলার ছবি দেওয়া হয়েছে তিনি নাকি সেই বাড়িটি পাননি। সেই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। আবারো প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপরে অভিযোগ। জানা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আড়ালে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে। বুধবার এমনটাই দাবি তুলে সিবিআই মামলা দায়ের করেছে। তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য গৃহ ঋণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিওয়ান হাউসিং ফাইন্যান্স লিমিটেডের প্রোমোটার কপিল এবং ধীরাজ ওয়াধওয়ান এই টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছেন।
যদিও জানিয়ে রাখি, এই দুজন বর্তমানে একটি দুর্নীতি মামলায় জেলে রয়েছেন। তাদের সাথে সরাসরি সংযোগ রয়েছে ইয়েস ব্যাংক এর রানা কাপুরের। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যে গৃহ ঋণ দেওয়া হয়েছিল, তাতে সুদের পরিমাণ ভর্তুকি দিয়েছিল সরকার। ডি এইচ এফ এল এর মত সংস্থার মাধ্যমে সেই ভর্তুকির টাকা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগ, এই জালিয়াতরা কয়েক হাজার ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছে। এবং বেশ কিছু টাকা আত্মসাৎ করেছে এই যোজনা থেকে। এর ফলে আবারো বিতর্কে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা।
ফরেনসিক অডিট তদন্তে নেমে দেখেছে কপিল এবং ধীরাজ ২ লক্ষ ৬০ হাজার গৃহঋণের অ্যাকাউন্ট খুলে ছিল। এর মধ্যে বহু একাউন্ট ছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলি আবার ডি এইচ এফ এল এর বান্দ্রা শাখার নামে খোলা হয়েছিল। আদতে কিন্তু ডিএইচএফএলের কোন বান্দ্রা শাখার অস্তিত্ব নেই। ২০১৫ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা চালু করা, তারপরে ২০১৮ সালের জুন মাস নাগাদ ডিএইচএফএল তার বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলিকে ৮৮ হাজার ৬৫১ ঋণের আবেদন মঞ্জুর করতে বলেছিল। সেই ঋণের সুদের ভর্তুকি বাবদ সরকারের কাছ থেকে ১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই ৫৩৯ কোটি টাকা মেটানো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনো ১ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা বকেয়া আছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছর জুন মাসে সিবিআই এই দুই ওয়াধ ওয়ান ভাই এবং ইয়েস ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা রানা কাপুর এর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল। অভিযোগ ছিল রানা কাপুর এই দুই ভাই এর থেকে ঘুষ গ্রহণ করেছেন। ইয়েস ব্যাংক সাধারণ মানুষের ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ডিএইচএফএল সংস্থাতে বিনিয়োগ করেছিল। জানা গিয়েছিল তার প্রতিদানে রানা কাপুর কে ঘুষ দেওয়া হয়। তবে রানা কাপুর কে সরাসরি না দিয়ে, রানার স্ত্রী এবং মেয়ের একটি সংস্থায় এই টাকা বিনিয়োগ করেছিল ডিএইচএফএল। এই অভিযোগে কপিল এবং ধীরাজকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। মার্চ মাসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রানা কাপুর। এই বিতরকের পর আবারও কপিল এবং ধীরাজের নাম উঠে এলো প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায়। প্রশ্নের মুখে প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নের প্রকল্প।