প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণার পর আজ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও পরিষেবা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে এক টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘আগামী ২১ দিনের জন্য আপনার বাড়ি স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, ভারতে ৫৬২ জনের দেহে করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯-এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে ইতিমধ্যে ৯ জন মারা গেছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছেন, এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সংক্রমণ বিস্ফোরণের আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর ফলে দেশ জুড়ে স্বাভাবিক জনজীবনে অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেনে নিন লকডাউন চলাকালীন ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য –
১) প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর বিভিন্ন রাজ্যের জনতা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করার জন্য দোকানগুলোতে ভিড় করতে শুরু করে। দিল্লি, মুম্বই ও বেঙ্গালুরুতে মুদির দোকানগুলোতে জনতাকে ভিড় করতে দেখা গেছে। অনেকেই দাম বাড়ার অভিযোগ করেছেন।
২) কী খোলা থাকতে পারে তা নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যেও পুলিশের পদক্ষেপের আশঙ্কায় দোকানগুলি বন্ধ হয়ে যায়। রাজ্যগুলি যখন তাদের সীমানা বন্ধ করে দেয় ফলে জাতীয় সড়ক গুলোতে দুধ, ফল এবং সবজি বহনকারী ট্রাকগুলির দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
৩) দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। লকডাউনের সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে শাক-সবজী বিক্রেতা এবং ভূষিমাল ব্যবসায়ীদের ই-পাস দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
৪) সফল, মাদার ডেইরির ফল এবং সবজি ব্র্যান্ড ঘোষণা করেছে যে তাদের সমস্ত আউটলেট খোলা থাকবে। সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ২ টা এবং তারপরে বিকাল ৪ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে সফলের সমস্ত স্টোর।
৫) উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বা ওষুধের জন্য সরকারের দেওয়া হেল্পলাইনে কল করলে তা জনতার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে।
৬) ওয়ালমার্ট ইনক-এর ফ্লিপকার্ট পরিষেবা স্থগিত করেছে এবং মুদি সরবরাহকারী অ্যামাজন ভারতের প্যান্ট্রি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
৭) ন্যায্য মূল্যের দোকান এবং খাবার, মুদি, ফলমূল, শাকসব্জী, দুগ্ধ, মাংস, মাছ, পশুর চারণের ব্যবসায়ের যুক্ত ক্ষেত্রগুলো খোলা রাখতে সরকারি নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
৮) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা ও পণ্যাদির ঘাটতি সংক্রান্ত সমস্ত গুজবের প্রতি কঠোর নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে।
৯) গুজরাট এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যের বিভিন্ন দোকানের সামনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করে সার্কেল তৈরি করেছে।
১০) লকডাউনের কারণে ২.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।