লকডাউনের জেরে রাজ্যে মার্চ মাস থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকার পর অবশেষে রেল রাজ্য দফায় দফায় কি করে লোকাল ট্রেন চালানো যাবে সেই নিয়ে বৈঠক করছে। গত সোমবারের বৈঠকে রেল কর্তারা ১০-১৫ শতাংশ ট্রেন চালানোর কথা বলেছিল। কিন্তু এত কম সংখ্যক ট্রেন চললে ভিড় আরো বাড়বে এবং সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে এই কথা ভেবে দফায় দফায় বৈঠক করে রেল রাজ্য। এরপর আলোচনা পর্বের তিন দিনের মধ্যেই লোকাল ট্রেন চালানো সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়। গতকালের নবান্নের এক বৈঠকে রেল কর্তারা জানায় অফিস টাইমে রেল ৩০-৪০ শতাংশ ট্রেন চালাতে প্রস্তুত।
প্রাক্-করোনাকালে সাধারণ দিনে শিয়ালদহ শাখায় ৯১৫টি ট্রেন চলত, হাওড়া শাখায় চলত ৪০৭টি। এবার করোনা পরিস্থিতিতে কোন সময় কোন স্টেশনে কেমন ভিড় হয় সেই পরিসংখ্যান বিচার করে সকাল সন্ধ্যা অফিস টাইমে রেল ৪০ শতাংশ ট্রেন চালাবে বলে জানা যাচ্ছে। ১০-১৫ শতাংশ ট্রেন চালালে ট্রেনে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যেত ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হতো না। আর এত কম সংখ্যক আরপিএফ দিয়ে বিশাল পরিমাণ যাত্রীর ভিড় রেল বা রাজ্যের কারো পক্ষেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হত না।
গতকালের বৈঠকে রেল ও রাজ্য উভয় পক্ষ মিলে কি করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লোকাল ট্রেন চালানো যায় সেই নিয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরি করেছে। হয়তো রেল বেশি সংখ্যক গ্যালোপিং ট্রেন চালাবে। সেক্ষেত্রে খুব কম ট্রেন সব স্টেশনে দাড়াবে। এছাড়াও ঠিক হয়েছে ট্রেনে অর্ধেক যাত্রীর বসে যাওয়া, স্টেশনে দূরত্ব-বিধি মেনে চলা, জীবাণুনাশ নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং হবে। আর ট্রেনে প্রত্যেক যাত্রীর ক্ষেত্রেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
ট্রেন চালু হলে টিকিট ছাড়া স্টেশনে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আপাতত এখন হকাররা ট্রেনে বা স্টেশনে ঢুকতে পারবেন না। ভেন্ডারদের জন্য হয়তো পৃথক ভেন্ডার ট্রেনের ব্যবস্থা করবে রেল। এরপর আজ বৃহস্পতিবার ৫ ই নভেম্বর ট্রেন চালানোর বিষয়ে রেল ও রাজ্য চূড়ান্ত বৈঠক করবে। আজকের চূড়ান্ত বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেটাই দেখার।