করোনা সংক্রমনের দাপটে নাজেহাল হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এখনও অব্দি অনিয়ন্ত্রিত সংক্রমণ হার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে সাধারণ মানুষের। দেশের একাধিক রাজ্যে চলছে লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে আশার আলো হয়ে উদয় হয়েছে অ্যান্টিবডি ককটেলের। ওষুধ সংস্থা Roche India ভারতে নিয়ে এসেছে এই অ্যান্টিবডি ককটেল। এটি কাসিরিভিমাব ও ইমডেভিমাব এর সংমিশ্রণ। জানা গিয়েছে, অ্যান্টিবডি ককটেলের জাদুতে একদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮২ বছরের বৃদ্ধ। হরিয়ানার মেদান্ত হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডঃ নরেশ ত্রেহান জানিয়েছেন, “মঙ্গলবার কো মর্বিডিটি যুক্ত ওই ৮২ বছরের বৃদ্ধের শরীরে অ্যান্টিবডি ককটেল প্রয়োগ করা হয়েছিল। তারপর বুধবার তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরেছেন।”
অ্যান্টিবডি ককটেল প্রয়োগের একদিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার বিষয়ে ডঃ নরেশ ত্রেহান জানিয়েছেন, “ওই রোগীকে মাত্র ২৪ ঘন্টায় সুস্থ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে তিনি সুস্থ হয়ে গেলেও তার ওপর কড়া নজরদারি চালানো হবে। এক্ষেত্রে যাদের দেহে মূলত সংখ্যা বা ভাইরাস লোড সবথেকে বেশি থাকে তাদের ভাইরাস সংখ্যা দ্রুত কমছে দেখা যায়। প্রথম পর্যায়ে কাসিরিভিমাব ও ইমডেভিমাব এর সংমিশ্রণ প্রয়োগ করলে রোগীর কোষে ভাইরাস প্রবেশে বাধা দেয়। এই সংমিশ্রণ করোনাভাইরাসের পাশাপাশি বি ১.৬১৭ ভারিয়েন্ট প্রতিরোধে সক্ষম।”
ভারতে গত মঙ্গলবার প্রথম অ্যান্টিবডি ককটেল প্রয়োগ করা হয় করোনা আক্রান্ত ওই ৮২ বছরের বৃদ্ধের শরীরে। তিনি একদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। এই বিষয়ে মেদান্ত হাসপাতাল এর ড: সত্য প্রকাশ যাদব টুইট করে বলেছেন, “অবশেষে করোনা সংক্রমণের চিকিৎসায় বাজারে এলো মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ককটেল ও প্রথম ডোজটি পেয়েছেন ওই বৃদ্ধ।” এই ককটেল ভ্যাকসিনের প্রয়োগ দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করোনাভাইরাস ও বিভিন্ন ক্ষতিকর প্যাথোজেন এর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা দেয়। এর আগে এই ককটেল ভ্যাকসিন এর প্রয়োগ করে আক্রান্ত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এই অ্যান্টিবডি ককটেলের দামের বিষয়ে Roche ফার্মা একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে ওষুধের ১২০০ মিলিগ্রামের ডোজে থাকছে ৬০০ মিলিগ্রাম কাসিরিভিমাব ও ৬০০ মিলিগ্রাম ইমডেভিমাব। প্রতিটি ওষুধের দাম ধার্য করা হয়েছে ৫৯ হাজার ৭৫০ টাকা। মাল্টিপল ডোজের সর্বোচ্চ দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। ওষুধের একটি প্যাকে দুজন রোগীর চিকিৎসা হবে। ভারতে এই ওষুধের বিপণনের দায়িত্বে থাকবে সিপলা সংস্থা।