প্রীতম দাস, নিজস্ব প্রতিনিধি: আকাশে বাতাসে এখন পুজোর গন্ধ। বাঙালি এখন উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা কিন্তু এই উৎসব তথা পুজোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে নানা শাস্ত্রীয় ধর্মীয় কারণ। জানলে আশ্চর্য হবেন, অশুভ শক্তির সংহারিনি মা দুর্গার প্রতিমা তৈরির জন্য বেশ কিছু জায়গার মাটি। রাজবাড়ির মাটি, চৌমাথার মাটি, গঙ্গার দুই তীরের মাটি ও নিষিদ্ধ পল্লীর মাটি। নিষিদ্ধ পল্লীতে থাকা বারাঙ্গনার ঘরের দরজার বাইরে থেকে মাটি সংগ্রহ করা হয়।
কিন্তু কেনো এই রীতি? একজন কামাসক্ত বা কামাক্রান্ত পুরুষ যখন যৌনকর্মীর ঘরে প্রবেশ করে দরজার বাইরে পদধুলায় পড়ে থাকে তার সারাজীবন ধরে সঞ্চয় করা পূণ্য। কারণ তিনি তার পূণ্য ঘরের বাইরে রেখে ঘরে প্রবেশ করেছেন এবং ঘর থেকে পাপ অর্জন করে বাইরে আসবেন। প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রজ্ঞরা গনিকাদের সমাজের পবিত্র অংশ বলে মনে করেছেন। অপর দিকে পুরুষ মানুষের গরল পান সমাজকে গরোলমুক্ত রাখেন, নিস্কুলুষ রাখেন ও তারা সেই সূত্রে পূণ্য অর্জন করে থাকেন।
তাদের পদধূলিও লেগে থাকে তাদের ঘরের দরজার বাইরের মাটিতে। তাই এই মাটি পবিত্র। বলাবাহুল্য, তৎকালীন রাজশক্তির আর্থিক ও পেশী বলের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা ছিল না হিন্দু শাস্ত্রজ্ঞদের। তাই তারা সুচতুর ও সুকৌশলে সমাজের এই দুঃখিনী নারির সমাজের অন্যতম বড়ো পবিত্র অনুষ্ঠানের সঙ্গে অঙ্গীভূত করে সমাজের সেই অভিশপ্ত মুখে সপাটে থাপ্পড় মেরে গেছেন।