মহার্ঘ ভাতা সম্পর্কিত আন্দোলনের মধ্যেই সম্প্রতি নবান্নের একাধিক দপ্তরে গিয়ে সরকারি কর্মীদের কাজকর্ম দেখে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে কখনো এমনটা করতে দেখা যায়নি মমতাকে। জানা গিয়েছে এবার থেকে সমস্ত সরকারি দপ্তরে কর্মীদের হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক সিস্টেম চালু করা হবে। মুখের ছবি এবং আঙুলের ছাপ দিয়ে অফিসে লগইন এবং লগ আউট করতে হবে। সরকারি কর্মীরা এরপরে যখন তখন অফিসে আসতে পারবেন না বা অফিস ছেড়ে যেতে পারবেন না। সরকারি কর্মীদের কাজ প্রসঙ্গে শুক্রবার তৃণমূলের শীর্ষ বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমা বলেন, “আগের বাম সরকারের আমলের থেকে অনেক বেশি পরিমাণে কাজ হচ্ছে। মানুষকে ঘরে ঘরে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীরা অধিকাংশই খুব ভালো কাজ করছেন। তবে একাংশ বিরোধী দলের হয়ে নানা ধরনের কুৎসা এবং অপপ্রচার করছেন। সেই কারণে আমাদের প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে হবে।”
এদিকে মহার্ঘভাতা বিতর্ক প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাম আমলে মাত্র ৩৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হতো, আমাদের সরকার এসে ১০৬ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দিচ্ছে। কেন্দ্রের চাকরি এবং বেতন দুটোই আলাদা। রাজ্যে চাকরি করে কেন্দ্রের সমান বেতন দাবি করা অনৈতিক। আমি সীমিত সামর্থ্য মেনে যতটা পারি মহার্ঘ ভাতা দিয়েছি। কিন্তু একবারও তো কেউ বলছেন না, কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের ন্যায্য বকেয়া পাওনা দেওয়া হচ্ছে না কেন?” এর আগে গত ১৬ মার্চ আচমকা মুখ্যমন্ত্রী নবান্নর ১৪ তলায় যাওয়ার আগে ১২ তলায় লিফট থেকে নেমে পড়েন। এর আগে ১৫ মার্চ ৫ তলায় গিয়ে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কাজকর্ম দেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫ তারিখের সেই সারপ্রাইজ ভিজিট এর সময় নাকি মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেছিলেন, “১০ মার্চ কারা কারা আসেন নি অফিসে?”
গত ১৫ তারিখ দুপুর ১২ টা ৫ মিনিট নাগাদ নবান্নের ৫ তলায় ৪০৩ নম্বর রুমে এবং ৪০৪ নম্বর রুমে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানতে চান ১০ তারিখ কারা কারা কাজে আসেননি। প্রসঙ্গত, মমতা যখন সেখানে ছিলেন তখন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের হাজিরা ছিল মাত্র ২৫ শতাংশ। জানা গিয়েছে, যারা সেই সময় অফিসে উপস্থিত ছিলেন তারা জানিয়েছেন, ছয় জন অসুস্থ থাকার কারণে উপস্থিত নেই এবং বাকি দু-একজন ছুটিতে রয়েছেন। সেই কারণেই এবার দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে ধর্মঘটে অংশ নেওয়ার কর্মীদের উদ্দেশ্যে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের তরফে শোকজ নোটিশ জারি করা হয়েছে বিগত কয়েকদিনে। নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১০ মার্চ তারা কেন অফিসে আসেননি, তার সন্তোষজনক জবাব না পেলে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে। আর জবাব সন্তোষজনক না হলে একদিনের বেতন কাটা যাবে। এ পাশাপাশি কর্ম জীবন থেকে একদিন বাদ পড়বে। পেনশন এবং গ্রাচুইটি সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ক্ষেত্রেও সামান্য প্রভাব পড়তে পারে এর কারণে।