শরৎকালে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদীয়া দুর্গোৎসব। দূর্গাপুজা দেখতে দেখতে কেমন কেটে যায়। আমাদের মন ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। আবার এক বছরের অপেক্ষা। কিন্তু ভারাক্রান্ত হওয়ার কিছু নেই আমাদের অনেকেরই বাড়িতে কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। বিশেষ করে পূর্ব বাংলার মানুষের গৃহে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো হয়ে থাকে।
লক্ষ্মীকে নানারূপে আরাধনা
মূর্তি :
মাটির দিয়ে তৈরি ছাঁচে বা কাঠামো তৈরি করে তাতে দেবী মূর্তি তৈরি করে পুজো করা হয়।
আড়ি লক্ষী :
বেতের ছোট ঝুড়িতে ধান ভর্তি করে তার ওপর সিঁদুর কৌটা দিয়ে লাল চেলিতে মুড়ে দেওয়া হয়। এটিকেই দেবী রূপে কল্পনা করে পুজো করা হয়। একে বলে আড়ি লক্ষী।
কলার বেড় :
কলার বাকল কে গোল করে নারকেলের নতুন কাঠি দিয়ে আটকানো হয়। তাতে সিঁদুর দিয়ে বাঙালি স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা হয়। কলার বাকল দিয়ে তৈরি চোঙাকৃতির ভিতর নিচুনি রাখা হয়। কাঠের আসনের উপরে লক্ষ্মীর পা অঙ্কিত আলপনার ওপরে রাখা হয়। এই নটি বাকলের মধ্যে পঞ্চশস্য দেওয়া হয়। সর্বশেষে শিস যুক্ত নারকেল রেখে লাল চেলি দিয়ে ঢেকে বউ সাজিয়ে লক্ষী কল্পনা করা হয়।
সপ্ততরী :
নবপত্রিকা বা কলার পেটোর তৈরি নৌকা পূজার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এই নৌকা এখনও বহু গৃহস্থও তৈরি হয় তবে বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এগুলিকে বলা হয় সপ্ততরী। এটি বাণিজ্যের নৌকা হিসাবে ধরা হয়। তাতে অনেকেই পয়সা, চাল,ডাল, হরিতকি, হলুদ সাজিয়ে রাখেন।
লক্ষ্মীর মুখ সমন্বিত পোড়া মাটির ঘট :
লক্ষ্মীর মুখ সমন্বিত পোড়ামাটির ঘটে চাল বা কখনো জল ভরে সেটিকে লক্ষ্মী কল্পনা করে পুজো করা হয়।
সরায় পটচিত্র :
অনেকের বাড়িতেই পূর্ববঙ্গীয় রীতি মেনে সরার পটচিত্রে পূজা করা হয়। এই সরাতে লক্ষ্মী, জয়া বিজয়া সহ কয়েকটি বিশেষ পুতুলকে চিত্রায়িত করা হয়। ঢাকা ফরিদপুর অঞ্চলের এই সরায় পুজোর রীতি এখনো চলে আসছে। শান্তিপুর, নদীয়া জেলার তাহিরপুর, নবদ্দীপ, উত্তর 24 পরগনায় বিভিন্ন স্থানে এই সরার উপরে পটচিত্র আঁকা হয়। তবে অঞ্চল ভেদে সরার উপর লক্ষীর সাথে তিন,পাঁচ, সাতটি পুতুল আঁকা হয়। এতে থাকে রাধাকৃষ্ণ, সপরিবার দুর্গা।
Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জী