‘বিজেপির বিশ্বকাপ’: ভারতের মোদি ক্রিকেটকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন
এই ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলছে জোর কদমে
ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে ইতি মধ্যেই আমেদাবাদে নির্মিত হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর স্টেডিয়াম। আর এই স্টেডিয়ামেই ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া টেস্ট ম্যাচ এর আগে ভারত অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট এর ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চলতি বছর মার্চ মাসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিস একসাথে স্টেডিয়ামের ভিতরে মঞ্চ সজ্জিত একটি বিশেষ গাড়িতে চড়েছিলেন। পরে এই গাড়িটিকে একটি স্বর্ণ নির্মিত রথের মতো আদি রূপ দেওয়া হয়। তারা দুজনেই দর্শকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন এবং তারপর তারা মূল মঞ্চে ফিরে যান এবং তাদের বক্তব্য রাখেন। তবে অনুষ্ঠানের মূল অংশ হিসেবে মোদি স্টেডিয়ামের ভিতরে মোদির একটি বিশাল আকার পোস্টার স্থাপন করা হয়।
ফলে বোঝাই যাচ্ছে ২০২৩ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ঘিরে একটা মোদি বন্দনা হতেই পারে। ২০২৩ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপকে মোদি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন বলে মনে করছে অনেক দেশ। স্বাগতিক দেশ হিসেবে বাড়তি সুবিধা এবং চরম ফরমে থাকা ক্রিকেটারদের কারণে ভারতীয় ক্রিকেট এই মুহূর্তে অনেকটাই এগিয়ে। তাছাড়াও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিপুল আর্থিক সামর্থ্য আগামী ৪৬ দিনের এই টুর্নামেন্টে ফেভারিট দল গুলোর থেকে ভারতকে অনেকটা এগিয়ে রাখতে পারে। বৃহস্পতিবার ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে প্রথম ম্যাচ। এই ম্যাচের মাধ্যমেই সূচনা হবে ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩ তম আসরের শিরোপা নিজের দেশে রেখে দেওয়ার জন্য একেবারে মুখিয়ে রয়েছে ভারত। আর প্রথমবারের মত এককভাবে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। ১২ বছর হয়ে গেছে ভারত শেষ বার বিশ্বকাপ জিতেছে। তাই এবারের বিশ্বকাপটা ভারতের জন্য স্মরণীয় করে রাখতে চাইছে ভারত সরকার এবং বিসিসিআই। তবে তার মাঝেই কিছু এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে যা দেখে স্পষ্টই ধারণা করা যায় এটা শুধুমাত্র ক্রিকেট বিশ্বকাপ নয় বরং এটা বলতে গেলে বিজেপির বিশ্বকাপ।
স্টেডিয়ামের নামকরণ থেকে শুরু করে ভেনু বাছাই এবং পাকিস্তান ও মুসলমানদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা, সবকিছুই করা হচ্ছে এই বিশ্বকাপে একেবারে জোরদার ভাবে। মোদির হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় জনতা পার্টি তৃতীয় মেয়াদের নয়া দিল্লির ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে রাখতে এই টুর্নামেন্টকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। কেউ কেউ আবার বলছেন, যদি ভারতীয় ক্রিকেট দল এই বিশ্বকাপে জয়ী হয় তাহলে ২০২৪ জুন মাসে বিজেপির মেয়াদ শেষ হবার প্রায় ছয় মাস আগেই নির্বাচনের ঘোষণা করে দেবেন মোদি নিজেই। এ প্রসঙ্গে ইতিহাসবিদ এবং উপন্যাসিক এবং তার সাথেই ক্রিকেট ভক্ত মুকুল কেশবন বলছেন, আগের যে কোন সময়ের থেকে এই বিশ্বকাপকে সব থেকে বেশি রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। তার দৃষ্টিতে, বিজেপি সরকার নয়া দিল্লিতে আয়োজিত জি-টোয়েন্টি জোটের সম্মেলনের যেভাবে রাজনীতিকরণ করেছে, ঠিক এই বিশ্বকাপকেও এই ভাবেই কলুষিত করবে বিজেপি।