শ্রেয়া চ্যাটার্জি : নারী অর্থে কারুর মা, কারুর বোন, কারুর স্ত্রী, কারুর সন্তান। নারী ছাড়া সমাজ অচল। নারী ই জীবনের শুরু। কিন্তু সেই নারী আজ বড্ড অবহেলিত। কামনা-বাসনা লালসা তাকে গ্রাস করছে প্রতিনিয়ত। নারী ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়।
সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গেছে কোনো ভালো খবরএ নয়, খবরে রয়েছে শুধু হিংসা কামনা-বাসনার থাবা। সাত বছর আগে দিল্লির নির্ভয়া কান্ড আমাদের আবার মনে করিয়ে দিল হায়দ্রাবাদের ঘটনা। পেশায় পশুচিকিত্সক একটি মেয়ে ফিরছিল রাত করে, মাঝপথে স্কুটি খারাপ হয়ে যায়। সাহায্য চেয়েছিল এক ট্রাকচালকের কাছে। কিন্তু না সে সাহায্য করেনি ? অসহায়ত্বের সুযোগ নেয় ট্রাকচালক টি। অপরাধ করে ধর্ষণের প্রমাণ লোপাটের জন্য তাকে পেট্রল জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। শেষ হয়ে যায় আরেকটি নির্ভয়া।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কলকাতার বুকে কালীঘাট চত্বরে ধর্ষিতা হলেন দুই নাবালিকা, ধর্ষিতদের মধ্যে তার মধ্যে একজন নাবালক, বয়স ১৪ হলেও সে কাজটি কিন্তু নাবালকের মতন করে নি।
কিন্তু প্রশ্নটা হলো এমন কি চলতেই থাকবে? দোষীরা কি শাস্তি পাবে? কিন্তু দোষীদের ওই কয়েক বছরের জেলবন্দি জীবন কি তাদের এবং সমাজটাকে পাল্টাতে পারবে? উত্তরটা হয়তো নয় কারণ তাহলে এমন অনেক শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তারপরেও কিন্তু সমাজটা পাল্টায়নি সেটা হায়দ্রাবাদ, কালীঘাট এর ঘটনা গুলোই প্রমাণ দিচ্ছে।
তবে এ প্রসঙ্গে রাজনীতিবিদরাও কিন্তু সবসময় সরব হয়ে ওঠেন না, তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেন না। হায়দ্রাবাদের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তেলেঙ্গানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে ‘মেয়েটির তার বোনকে ফোন করা ঠিক হয়নি , সেই সময় ১০০ ডায়াল করে পুলিশকে ফোন করা উচিত ছিল ‘ এমন একটা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মেয়েটির হয়তো তখন মাথায় কাজ করেনি, যে তখন তাকে পুলিশকে ফোন করা উচিত ছিল।
এটা তার দোষের না, ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ফোন করেছিল তার বোনকে, শুধু এইটুকু জানাতে যে তার ভয় করছে। প্রতিনিয়ত দেশের, রাজ্যে, অঞ্চলের আনাচে-কানাচে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে এরকম ঘটনা। তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে কোথায় নারীর নিরাপত্তা? নারী অর্থ এ অর্ধেক আকাশ। সেই অর্ধেক আকাশ আজ মেঘে ঢেকে আছে। এই মেঘ সরাতে না পারলে কোনদিন এই সমাজের সূর্য উঠবে না, সমাজ উন্নতির পথে যাবে না।