কালো টাকার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের কড়া পদক্ষেপ, বন্ধ হতে পারে এসব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের সমবায় ব্যাংকগুলির আর্থিক স্বচ্ছতা ফেরানোর জন্য বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। কালো টাকা উদ্ধারের লক্ষ্যে সম্প্রতি নবান্ন থেকে একটি নির্দেশ জারি করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত সমবায় ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য জমা দিতে হবে।
নবান্নের নির্দেশে কী রয়েছে?
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিটি সমবায় ব্যাংককে তাদের সমস্ত অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হবে। প্রয়োজনীয় তথ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলি হল—
– কতগুলি অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রয়েছে।
– কোন কোন অ্যাকাউন্টে দীর্ঘদিন লেনদেন বন্ধ রয়েছে।
– বড় অঙ্কের বা সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের তালিকা।
রাজ্য সরকার মনে করছে এই তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে বহু নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা যাবে এবং কালো টাকার উৎস শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ
প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে রাজ্যের সমবায় ব্যাংকগুলিতে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট এবং হিসাব বহির্ভূত লেনদেনের পরিমাণ উদ্বেগজনক। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই ব্যাংকগুলো থেকে কালো টাকার বড় উৎস চিহ্নিত করা সম্ভব।
এরপরই সমবায় ব্যাংকগুলিকে গত ২২ মাসের বড় লেনদেনের সমস্ত তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করার লক্ষ্যে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারও একাধিক বৈঠক করেছেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক
কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী সমবায় ব্যাংকগুলোতে কেওয়াইসি (Know Your Customer) বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়েছেন।
– গ্রাহকদের কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার শেষ সময়সীমা ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
– আধার কার্ড সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হতে পারে।
সরকারের আশা
রাজ্য সরকার আশা করছে যে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজ্যের আর্থিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। একইসঙ্গে কালো টাকার বড় অংশ উদ্ধারের পাশাপাশি সমবায় ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনা সম্ভব হবে।
এই উদ্যোগ শুধুমাত্র কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে আনবে না, বরং রাজ্যের আর্থিক ব্যবস্থাকেও আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করছে সরকার।