এক আশ্চর্য ঘটনা, ডিম আর গুড় দিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন তামিলনাড়ুর এক ইঞ্জিনিয়ার

শ্রেয়া চ্যাটার্জী : সাধারণত গ্রামের দিকে বাড়ি বানানো এবং মাটি দিয়ে এবং চেষ্টা করা হয় যাতে এই বাড়িটি অনেকদিন পর্যন্ত ঠিক থাকে। কিন্তু গ্রামেগঞ্জে অতিবৃষ্টির ফলে মাটি ধুয়ে বেরিয়ে যায়। যার ফলে বহু মানুষ বাস্তুহারা হয়। কিন্তু আপনি কি কখনো শুনেছেন গুড় আর ডিম দিয়ে বাড়ি তৈরি হতে!

তামিলনাড়ুর টিরুপুর জেলার ভেলাকৈল এ জওহর যিনি ৩২০০ বর্গফুটের একটি বাড়ি বানিয়েছেন ডিমের সাদা অংশ আর গুড় দিয়ে। এই বাড়িটি একটি পরিবেশবান্ধব বাড়ি হয়ে উঠেছে। তার বক্তব্য, আমরা বাড়ি বানাতে গিয়ে নানা কারনে আমাদের কার্যকলাপের জন্য পরিবেশকে দূষিত করছি। তাই যেটা পরিবেশ দূষণ করে না, এমন জিনিস দিয়ে বাড়ি বানানোর তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন। আর এই ভাবনা থেকেই তার এই অদ্ভুত রকমের একটা চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে। এ বিষয়ে তাকে সাহায্য করেছিল তার ভাই আরাভিন্দ মনহরন। ইনি ২৭ বছর বয়সী একজন ইঞ্জিনিয়ার। যিনি ২০১৯ সালে একটি কনস্ট্রাকশন কম্পানি খোলেন যার নাম ‘পিঝাই আঝাগু’। এই কোম্পানি থেকে যে যে বাড়ি গুলি বানানোর দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে, সেই বাড়িগুলির বানানোর পদ্ধতি একেবারে আগের মত এবং যে ধরনের উপাদান ব্যবহার করা যা হয় সেগুলি প্রত্যেকটাই আশেপাশে পাওয়া যায়।

দুই ভাই মিলে যখন প্রথমে কাজটি শুরু করেছিলেন, তখন তারা প্রথমেই বাড়ি কি দিয়ে বানাবেন এটি সম্পর্কে অতটা ভাবেননি। তারা আশে পাশের কিছু রাজমিস্ত্রি এবং কিছু বৃদ্ধ মানুষকে তাদের এই কাজে যুক্ত করেছিলেন এবং তাদের সঙ্গে তারা যখন কথা বলেন এবং জানতে পারেন যে, এই ধরনের মানুষগুলো খুব আগেকার পদ্ধতি মেনে বাড়ি তৈরি করেছে আগেকার পদ্ধতিতে মাটির সঙ্গে মেশানো হতো গুড়। যা মাটিকে শক্ত করে বাঁধতে সাহায্য করত। তিনি অবশ্য আরো একটি কথা যোগ করেন, এই গুড়ের সঙ্গে যদি ডিমের সাদা অংশটি মেশানো যায়, তাহলে প্লাস্টার করার দেওয়াল টি বেশ চকচক করে।

বাড়িতে তৈরি করা হয়েছিল ২০১৯ ফেব্রুয়ারি মাসে। এই যে বাড়িটি বানানো হয় তবে সিমেন্টের জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছিল বালি, গুড়। ইটের ওপরে প্লাস্টার করা হয়েছিল পাঁচটি স্তরে, যার ফলে ইটের মধ্যে দিয়ে খুব সহজে অক্সিজেন চলাচল করতে পারবে। এই বাড়িটির ছাদ বানানো হয়েছে পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাঠ দিয়ে যেটি পাশের কাঠের বাজার থেকে খুব সহজেই পাওয়া যায়। পদ্ম ফুলের পাতা এবং পিঠের মাঝখানে দেওয়া হয়েছিল যেটা তার উইএর আক্রমণের হাত থেকে অনেকটা নিশ্চিন্ত করেছিল। বাড়িতে মেঝে বানানো হয়েছিল বেথামছেরলা স্টোন দিয়ে।