শ্রেয়া চ্যাটার্জি – করোনা ভাইরাস আমাদের কাছ থেকে কেড়েছে অনেক কিছু। আমরা অনেকেই প্রিয়জনদের হারিয়েছি একে একে। কষ্টে বুকের ভেতরটা যেন দলা পাকিয়ে উঠেছে। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন, এটি দিয়েছে অনেক কিছু। হিন্দু, মুসলমান, জৈন, খ্রিষ্টান সকলের এখন একটাই চিন্তা আমরা প্রত্যেকে যেন বেঁচে থাকি। সীমান্তে আজ কোন জঙ্গি নেই, সেখানে সেনাবাহিনীকে থাকতে হচ্ছে না। কারণ করোনার ভয় কার্যত প্রত্যেকেই এখন গৃহবন্দী। ধর্মের থেকে মানবতা যে সবার উপরে এমন নিদর্শন দেখানো পাঞ্জাবের একটি গুরুদ্বার। শিখ ধর্মে ধর্মাবলম্বী মানুষ হয়েও তারা খাওয়ালেন মুসলিম ধর্মী মাদ্রাসার ছাত্রদের।
সত্যিই একেই বলে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। পাগড়ী পড়া মানুষগুলো মিশে গেছে টুপি পরা মানুষ গুলোর মধ্যে। পাঞ্জাবের মালেরকটলা হা দা নারা সাহেব গুরুদ্বার মাদ্রাসার ছাত্রদের খাওয়ালেন যারা লকডাউনের জন্য ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন। মাদ্রাসা থেকে অনেক বাচ্চাদেরকে পাঠানো হয়ে গেছে, তাদের যে যার বাড়িতে। সে রকম ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ৪০ জন যারা বিহার এবং উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা, তারা কেউ বাড়ি যেতে পারেনি, তারা থেকে গেছেন ওইখানেই।
যারা আটকে পড়েছে তারা কি সারাদিন না খেয়ে থাকবে! এমন হতে পারে না। তাই গুরুদ্বার এর তরফ থেকে ব্যবস্থা করানো হয়েছে খাওয়ানোর জন্য। এই দুর্দিনে তারা হয়তো ধর্মের বিষয়টি ভুলে গিয়ে এমন ব্যবস্থা করেছেন। তাইতো বলা যে করোনা নিয়েছে অনেক কিছু কিন্তু এমন দৃশ্য তো দেখা যেত না যদি করোনা ভাইরাস থাবা না বসাত। মানুষই মানুষের মিল, ধর্মে-ধর্মে মিল। জাতপাতের বেড়াজাল মানুষ ভুলে গেছে। তাই কবির ভাষায় বলতেই হয় ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’।