শ্রেয়া চ্যাটার্জি – লকডাউন এর মধ্যেও একটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে গেল বিহারের গয়ায়। এক মহিলা তিনি করোনা ভাইরাস এ আক্রান্ত কিনা এই সন্দেহে ভর্তি হয়েছিলেন আইসোলেশন ওয়ার্ডে। সেখানেই দুদিন ধরে স্বাস্থ্যকর্মীর দ্বারা যৌন নিগ্রহের শিকার হন। তার ওপরে যৌন অত্যাচার চলেছিল দুদিন ধরে। এই মহিলা লুধিয়ানা থেকে বিহারে এসেছিলেন ২৫ তারিখ তার স্বামীর সঙ্গে। তিনি দুমাসের গর্ভবতী ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন গয়া পৌঁছানোর পরে তার অতিরিক্ত রক্তপাত হয়। সেই জন্য তার স্বামী তাকে অনুরাগ নারায়ন মগধ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেন ২৭ মার্চ। তাকে জরুরি বিভাগে ভর্তি নেওয়া হয়।
তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন এই সন্দেহে তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। তবে তার বাড়ির লোক অভিযোগ জানান এই আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকর্মীর দ্বারা তিনি যৌন নিগৃহীত হন। ২রা এপ্রিল এবং ৩রা এপ্রিল এই দুদিনের রাতে চলে তার ওপর যৌন অত্যাচার। তবে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয়, তার রিপোর্টটি নেতিবাচক আসায় তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়িতে আসার পরে তিনি কারো সঙ্গে কথা বলতেন না, একা থাকতে চাইতেন এবং ভয় তাকে ঘিরে ধরেছিল।
এমন দেখে বাড়ির লোক প্রশ্ন করার পরে উঠে আসে আসল তথ্যটি। তার স্বামী জানায় হাসপাতলের চিকিৎসক তাকে যৌন নিগ্রহ করেন। যার ফলে ৬ এপ্রিল তিনি মারা যান। এ প্রসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে বিষয়টি বিচার করা হবে এবং বিষয়টি যদি সত্যি বলে প্রমাণিত হয় তাহলে দোষী কে অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে।
করোনা ভাইরাস এর জন্য যে সমস্ত চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীরা রাতদিন এক করে পরিশ্রম করে চলেছেন, তারা আজ সাধারণ মানুষের কাছে ভগবানের আসনে অধিষ্ঠিত। তারা না থাকলে আমরা বোধহয় বেঁচে থাকতাম না। কিন্তু কয়েকজনের কুকর্মের জন্য পুরো চিকিৎসাশাস্ত্রের গায়ে কালিমা লাগছে।
গোটা বিশ্ব যখন একটা বীভৎস পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলছে, তখনও কি ধর্ষণ নিয়ে ভারতবর্ষকে চিন্তা করতে হবে? নারীদেরকে কোনো জায়গায় নিরাপত্তা থাকবে না? ডাক্তারের কাছে গিয়েও যদি মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে তাহলে কোথায় যাবেন? উপরের ঘটনাটি একটি জঘন্যতম অপরাধ।
মেয়েটির বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে রক্তপাত হয়ে যখন সে শারীরিক এবং মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে, সেই সুযোগে এই চিকিৎসক তার উপর দুদিন ধরে ধর্ষণ করেছেন। তাকে পাশবিক বলা চলে; নাকি তিনি পশুর চেয়েও অধম? তা সত্বেও করোনা ভাইরাসকে এ বিশ্ব থেকে মুক্ত করার জন্য ডাক্তার, নার্স এবং হাসপাতালের অন্যান্য সহকারি কর্মীদের স্যালুট জানাতে হয়।