আজ গ্রামবাংলায় চড়ক পূজা, রইলো এই সংক্রান্ত বহু অজানা তথ্য

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – সংক্রান্তির দিন পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোক উৎসব হল চড়ক। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। কথিত আছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ শিবের প্রেম পাওয়ার জন্য এবং শিবকে তুষ্ট করার জন্য নানান রকম ভক্তিমূলক গান বাজনা, নাচের মধ্য দিয়ে এবং নিজের গায়ের রক্ত দিয়ে এই উৎসব পালন করেন। এই পুজোর অন্যতম একটি দিক হলো যন্ত্রণা সহ্য করা। পিঠে, হাতে পায়ে, জিভে বা শরীরের অন্যান্য জায়গায় লোহার রড বিদ্ধ করা হয়। কখনো কখনো আবার কারো গায়ে লোহার শলাকা ছুড়ে ফেলা ফেলা হয়। যা সত্যিই খুব কষ্টকর। তবে ১৮৬৩ সালে ব্রিটিশ সরকার এই প্রথা বন্ধ করে দেয়। তাহলেও গ্রামাঞ্চলে অনেক দিকেই এই প্রথা প্রচলন আছে।

এছাড়াও চড়ক তলায় চড়ক গাছকে পুঁতে দিয়ে গাছটির ওপরে আরেকটি কাঠ বেঁধে দেওয়া হয়। কাঠটি এমন করে বাঁধা হয়, যাতে চড়ক গাছ এর উপর এই কাঠটি সহজ ভাবেই ঘুরতে পারে। এই কাঠের সঙ্গে কোন মানুষের দেহ গামছা দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়ে কাঠটিকে চক্রাকারে ঘোরানো হয়। চড়কের বিশেষত্ব হল, এই ঘূর্ণন। এটি দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে লোকের আগমন হয়। চড়ক কে কেন্দ্র করে মেলাও বসে। ওই একই দিনে ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে উৎসব পালন হয়। তবে নাম আলাদা। ভারতের মহারাষ্ট্রের ‘বগাড় উৎসব’ সিকিম ভুটানের ‘চোড়গ’ শ্রীলংকার ‘টুককুম’।

অনেক জায়গাতেই চড়ক উৎসব পালন হয় তবে কলকাতার ছাতুবাবু বাজারের চড়কের উৎসব দেখার মত। এটি শুরু হয় রামদুলাল দে সরকারের হাত ধরে। কলকাতার বিডন স্ট্রিট এর রাস্তার উপর সারি সারি দিয়ে বসে মেলার পসরা। তবে গ্রামে গঞ্জে অনেক জায়গাতেই এই মেলা অনুষ্ঠিত হয় সমারোহে। তবে এবছর করোনা ভাইরাস এর জন্য যেহেতু গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে লকডাউন চলছে। আর এর থেকে বাঁচার জন্য আমরা প্রত্যেকেই গৃহের মধ্যে বন্দি। আমরা প্রত্যেকেই অপেক্ষায় থাকবো আগামী বছরের জন্য।