এক নিবিড় অন্ধকারের মাঝে এক টুকরো আলোর মত এসে ধরা দিয়েছে এবারের বাংলা নববর্ষ। সেই অর্থে নববর্ষের কোনও আয়োজনই সেভাবে নেই এইবার। কিন্তু বাঙালির হৃদয় জুড়ে রয়েছে এই নববর্ষকে ঘিরে এক গভীর আবেগ, যা বোধকরি চাইলেও অস্বীকার করা সম্ভব নয়। নববর্ষের আনন্দসূর্যে যেন এক গ্রহণ লেগেছে। মারণ ভাইরাস কোভিড-১৯ করোনা থাবা বসিয়েছে সমস্ত বিশ্বের উপর। নিস্তার পায়নি প্রথম সারির দেশগুলিও। নিমেষের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন কোটি কোটি সাধারণ মানুষ, প্রাণ হারিয়েছেন বহুজন। কিছু মানুষের অশেষ ভুলের প্রায়শ্চিত করতে হচ্ছে সমগ্র বিশ্ববাসীকে। দোকানপাট থেকে শুরু করে সবই আজ বন্ধ।
অর্থনীতি আজ অগ্নিবলয়ের ওপর স্থাপিত।জরুরী পরিষেবা ছাড়া কিছুই পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু তাতে কি! জীবন তো কঠোর থেকে কঠোরতর পরিস্থিতির মাঝেও খুঁজে পেতে চায় বাঁচার রসদটুকু; আর এই বাঁচার লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে উজ্জাপিত আজ আমাদের নববর্ষ; গৃহবন্দী। চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ আমরা আজ । তবুও বাইরের জগতে পা ফেলবার এক অদম্য ইচ্ছা। এখানেই জীবনের সার্থকতা, জীবনের বিজয়গাঁথা, এই উৎসবের প্রাণ প্রতিষ্ঠা। জীবন মিলে গেছে জীবনের সাথে, এই উৎসবের বাতাবরণকে কেন্দ্র করে।
নতুন সূর্য আজ উদিত হয়েছে, আকাশ আজ অমলিন, স্বচ্ছ। বাড়িতে বাড়িতে কমলা ও বিনায়কের আরাধনা চলছে উলু, শঙ্খধ্বনি ও কাসরঘন্টার মধ্য দিয়ে। সকাল থেকে চলভাসে শুভেচ্ছার প্লাবন, কিছুটা হলেও মনকে প্রদান করেছে এক স্বস্তি। কিছুই বাকি বা অধরা নেই আজ। তাই আক্ষেপ নয়। প্রাকৃতিক নিয়মে যা এসেছে, প্রাকৃতিক নিয়মে তা চলেও যাবে একদিন। জীবন চলবে আপন ছন্দে, আপন খেলায়!! সবাই ভালো থাকুন। সুন্দর থাকুন। শুভ নববর্ষ
– কুণাল রায়