শ্রেয়া চ্যাটার্জি – কথাতেই আছে, যে মানুষ ফুল, গান, আর বাচ্চা ভালোবাসে না, সে মানুষ, মানুষ নয়। কিন্তু সেই ফুল থেকে যদি পচা মৃত দেহের মতো দুর্গন্ধ বের হয়, তাহলে কি কারোর ভালো লাগবে, উত্তরটা নাই হবে। তবে বিশ্বের বৃহত্তম ফুলের তালিকায় এখনও পর্যন্ত এই ফুলটি প্রথম স্থান করে নিয়েছে। এর একেকটির ওজন প্রায় ১১ কেজির মতোও হয়ে থাকে। এই অসাধারণ সুন্দর ফুলটির দেখা মিলেছে ইন্দোনেশিয়াতে। এটি ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় ফুল। সবচেয়ে মজার কথা হল, এই ফুলটির কোন গাছ নেই, নিজেই একটি গাছ। ফুল প্রেমী মানুষরা এর সৌন্দর্য দেখে আকৃষ্ট হবেন এ কথা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এরপর পচা, বিদঘুটে গন্ধের জন্য আপনার যে পালাই পালাই অবস্থা হবে একথা সত্য। এই ফুলটি এতটাই বড় হয় যে, ফুলের ব্যাস প্রায় দেড় থেকে তিন ফুট পর্যন্ত হয়।
১৮১৮ সালে সুমাত্রার জঙ্গলে এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়। বড়লার্ট স্ট্যামফোর্ড রাফলস সদলবলে এই জঙ্গলে বেড়াতে যান। সাথে ছিলেন জোসেফ আর্নল্ড তিনি একজন প্রাণী তত্ত্ববিদ। ‘বেনকুলেন’ নামক জায়গায় তারাই অদ্ভুত একটি জিনিস দেখতে পায়। দেখতে অনেকটা ফুলের মতো হলেও ঠিক ফুলের মতন নয় যেন। এই অদ্ভুত প্রজাতির ফুলটির নাম রাফ্লেশিয়া আর্নল্ডি। এটি এর বৈজ্ঞানিক নাম। স্ট্যামফোর্ড রাফলস ও জোসেফ আর্নল্ড এদের দুজনের নাম অনুসারে ফুলের নাম দেওয়া হয়। বড় বড় লাল রংয়ের পাপড়ির মধ্যে, সাদা ছিট ছিট দাগ। দেখতে খুব একটা সুন্দর না হলেও এতো বড় আকারের জন্যই এটি বিশেষ ফুল গুলির মধ্যে জায়গা করে নিতে পেরেছে।
গাছের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর জিনিসটি হল ফুল। ফুল মানুষকে সৌন্দর্য দেয়, সুগন্ধ দেয় এবং মন ফুরফুরে রাখে। গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানান রকমের ফুল। তবে এত বড় ফুল ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ছাড়া কোথাও দেখা যায় না। যদি দেখতেই হয়, আপনাকে এসব জায়গায় যেতে হবে। গিয়ে চাক্ষুষ করতে হবে, পৃথিবীর অদ্ভুত জিনিস। পচা মৃতদেহের মত গন্ধ নিয়ে শুধুমাত্র নিজের আকৃতির জন্য বিশ্বে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ফুল। পৃথিবীতে কতই না অদ্ভুত জিনিস দেখা যায়। পৃথিবীর সত্যিই বৈচিত্র্যময়।