শ্রেয়া চ্যাটার্জি – সম্প্রতি মুম্বাইয়ে ফ্লেমিংগো পাখি দেখা গিয়েছে। তাই যারা ফ্লেমিঙ্গো পাখিটি সম্পর্কে জানতেন না, তারাও কমবেশি জেনে ফেলেছেন। গোলাপি রঙের জন্য এই পাখিটি বিখ্যাত। গোলাপী আভায় শুধু দেখে মুগ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এই পাখিটির একটি অসাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে, এরা তাদের সারা জীবনের জন্য একজন সঙ্গীকেই বেছে নেয়। ঠিক মানুষের মত। ফ্লেমিংগো কে কখনো একা থাকতে দেখা যায় না। এরা দলবদ্ধ অবস্থায় থাকে। তবে সেই ঝাঁকের মধ্যেও নারী-পুরুষ বেছে নেয় ঠিক নিজের জীবনসঙ্গীকে।
বছরের পর বছর একই সঙ্গীর সঙ্গে থাকা, তার সঙ্গে মিলিত হওয়া, তার সঙ্গে যৌন চাহিদা মেটানো এবং ডিম পাড়া সবই চলে একসঙ্গে। এই পাখির সাধারণত ৫০ বছর বাঁচে। এ প্রসঙ্গে গবেষণা বলছে, এই পাখির এত বছর বেঁচে থাকার কারণ হল, এরা দলের মধ্যে থাকে। এরা কখনো একা হয় না। যার ফলে এদের জীবন চাপমুক্ত। ঠিক যেন মানুষের মতো। আমেরিকা, আফ্রিকা,এশিয়া মহাদেশ প্রভৃতি জায়গায় সামুদ্রিক জলের প্রাধান্য যেখানে বেশি সেখানে এই লম্বা লম্বা পায়ের ফ্লেমিঙ্গোর দলকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে দেখা যায়।
‘ফ্লেমিংগো’ শব্দটি স্পেনীয় শব্দ, ল্যাটিন শব্দ ‘ফ্ল্যামেংকো’ থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো আগুন। সাধারণত এদের পালকের উজ্জ্বল রঙের জন্য এমন কথা বলা হয়েছে। ফ্লেমিঙ্গোর পালকের রং গোলাপি, কমলা বা লাল রঙের হওয়ার কারণ হল তাদের খাবারের ডায়েট চার্ট এর জন্য। তাদের খাদ্যতালিকায় থাকে চিংড়ি, প্লাংকটন, শ্যাওলা। যদি এই খাবারগুলো পর্যাপ্ত পিগমেন্টেশন শরীরের সরবরাহ করতে না পারে তাহলে ফ্লেমিংগো সাদা রংয়ের হয়।
ফ্লেমিঙ্গো এক ঝাঁক এর মধ্যে এক মিলিয়ন পাখি আছে এমন রেকর্ডও পাওয়া গেছে। তবে ঝাঁকের মধ্যে থাকে বলে এরা অনেকটাই বিপদমুক্ত। সেই জন্য প্রচুর পরিমাণে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন হয়, তাই এদের সংখ্যাটা অনেকটা বেশি। তবে চোরা শিকারিরা এদের অনেক সময় ডিম চুরি করে অথবা মাংস হিসেবে এদের সংগ্রহ করে জিভ কেটে নেয়।