শ্রেয়া চ্যাটার্জি – ৭১ বছরের ইতিহাসে কোনো দিন এমন হয়নি। পর্যটকশূন্য এমন বাগান কেউ দেখেনি। কিন্তু করোনা ভাইরাস এর জন্য চারিদিকে লকডাউন চলছে মানুষ কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বাগানের গেটে তালা দিতে হয়েছে। দক্ষিণ হল্যান্ডের বিশাল হেক্টর জায়গা জুড়ে তৈরি হয়েছে এক অসাধারণ বাগান, যার নাম ‘কিউকেনহফ’। লকডাউনের জন্য গোটা বিশ্ব যখন প্রায় স্তব্ধ হয়ে পড়েছে, তখন প্রকৃতি একটু প্রাণ খুলে দম নিচ্ছে।
প্রতি বছর মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য দরজা খুলে দেয় এই কিউকেনহফ। দর্শকরা এখানে এসে প্রকৃতির শোভা দর্শন করেন আর মুগ্ধ হন। প্রথমে অবশ্য বাগানে সবজি এবং ফলমূল চাষ হত। সেইজন্য এই কেউকেনহোফ এর অর্থ হল ‘হেঁশেল বাগিচা’।
এমন অসাধারণ ছবি তুলেছেন চিত্রগ্রাহক অ্যালবার্ট ড্রোস। তাই যারা সেখানে গিয়ে চাক্ষুষ দেখার সুযোগ পাচ্ছেন না বলে কষ্ট পাচ্ছেন, তাদের কষ্ট খানিকটা লাঘব করে দিয়েছেন ইনি। আর গোটা বিশ্বের মানুষ কেউ এমন নৈসর্গিক দৃশ্য দেখার সুযোগ করে দেন। রংবেরঙের টিউলিপের ছটায় ভরে উঠেছে চারিদিক। কোথাও আঁকাবাঁকা পথে কোথাও বা সমান্তরালভাবে লাল, হলুদ আরো কত রঙের টিউলিপের সমাবেশ। বাগানের ঠিক মাঝখানে রয়েছে নীল ফুলের সমুদ্র।
পুরো বাগানটা ঘুরে দেখানোর জন্য রয়েছে নৌকা বা বাইক। তবে আপাতত এই বাগানকে দেখার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার উপর ভরসা করতে হবে। করোনার জেরে গোটা পৃথিবীর আবহাওয়া টা বড্ড কষ্টের। প্রত্যেকের জীবনটাই যেন ধূসর হয়ে গেছে। ধূসর জীবনকে একটু রঙিন করতে হাজির হয়ে গেছে কিউকেনহফ বাগান। চিত্রগ্রাহক একটি অসাধারণ ড্রোন ক্যামেরায় ছবি তুলেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে ফুলগুলিকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যা উপর থেকে দেখতে একটা আস্ত টিউলিপের মত লাগছে। টিউলিপ ছাড়া ঐ বাগানে রয়েছে প্রচুর চেরি গাছ। বাগানের মধ্যে যে ছোট ছোট পরিখা রয়েছে, সেইখানে বড় বড় গাছের কিংবা রংবেরঙের ফুলের ছায়া পড়ে এক অসাধারণ মনোরম দৃশ্য তৈরি করেছে।