কৌশিক পোল্ল্যে: কাজের আশায় তারা পাড়ি দিয়েছিলেন ভিনরাজ্যে। আত্মীয় পরিজনদের থেকে অনেক দুরে কোনো এক মেসবাড়ির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোনোরকমে দিন কাটিয়ে, মেহনতের টাকা তারা পাঠিয়ে দেয় বাড়িতে, হ্যাঁ এরাই পরিযায়ী শ্রমিক। এরা ভিন্নরাজ্যে আসে নতুন স্বপ্ন নিয়ে, রয়েছে ভয়, দুশ্চিন্তা তবু প্রতিদিন তারা এগিয়ে যান কর্মক্ষেত্রে রুটিরুজির নিমিত্তে।
তার মাঝেই বাধ সাধলো করোনা। একনিমিষে সবকিছু কেমন ওলট পালট হয়ে গেল। বন্ধ কারখানা, দোকানপাট, পরিবহন। হাতে নেই কাজ, তাই ওরা বাড়ি ফিরতে চায়। লকডাউনে সহস্র মাইল হেঁটে বাড়ি ফেরা কিংবা ফ্লাইওভারের নীচে রাত কাটিয়ে সকালে ফেলে দেওয়া পচা কলার খাওয়ার ঘটনা তো অনেকেই জেনে গিয়েছেন। কিন্তু যা আমরা ভাবতে চাই না, ভাবতে চেষ্টাও করি না তা হল, এই সবকিছুর মূল কারন কিন্তু ওই এক টুকরো রুটিকে কেন্দ্র করে যা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল রেললাইনের চাকায় কাটা পড়া পরিযায়ী শ্রমিকগুলির ছিন্নভিন্ন দেহের পাশে।
আলোচনা অনেক বেশি গম্ভীর হয়ে গেল কি! তাহলে একটা স্বস্তির খবর দিই। আজ থেকেই গোটা দেশে রেল পরিবহন চালু হচ্ছে। এই শ্রমিকগুলো বাড়ি ফিরতে পারবেন। এছাড়াও জানলে খুশি হবেন এই পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে নিজ উদ্যোগে বাসের ব্যবস্থা করে দিলেন অভিনেতা সোনু সুদ। লকডাউনের মাঝেই দশটি বাস জোগাড় করে মুম্বাইয়ে আটকে পরা কর্নাটকের ওই বাসিন্দাদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সবরকম প্রসাশনিক সম্মতি নিয়েই এই সিদ্ধান্তে আসেন অভিনেতা। এবিষয়ে মহারাষ্ট্র ও কর্নাটক সরকারের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়েছেন। মুম্বাইয়ের থানে থেকে বাসগুলি রওনা দিয়েছে কর্নাটকের গুলবার্গের উদ্দেশ্যে। সোনু জানান, লকডাউনের মধ্যে ভারতবর্ষের প্রত্যেক নাগরিকের মতো তাদেরও অধিকার আছে নিজের বাড়ি ফেরার, সেকারনেই তাদের বাড়ি ফেরানোর দায়িত্ব নিজেছেন তিনি। অভিনেতা আরও জানান, নিজের যতটুকু সাধ্য এবং ক্ষমতা রয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে অন্য রাজ্যেরও বেশ কয়েকজন আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন তিনি। এর আগেও করোনা মোকাবিলায় অভিনেতা নিজের হোটেলটি ছেড়ে দিয়েছিলেন কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে।