ব্যাটে ছক্কা না মারতে পারলেও কুমড়ো দিয়ে বানিয়ে ফেলুন ‘কুমড়োর ছক্কা’, জানুন রেসিপি
শ্রেয়া চ্যাটার্জি – কুমড়োতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন-সি এটি নিয়মিত খেলে সর্দি কাশি ঠান্ডা লাগা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই সব্জিতে ক্যালোরি এত মাত্রায় কম থাকে, আর ফাইবার এতটাই বেশি থাকে যে হজমে সহায়ক। কুমড়ো ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি সবজি। গাজরে তুলনায় কুমড়োতে বিটা ক্যারোটিন এর মাত্রা অনেক বেশি থাকে। যা চোখের জন্য অত্যন্ত ভালো। কুমড়োর সেদ্ধ, কুমড়ো ভাজা, কুমড়োর ছক্কা, কুমড়ো দিয়ে চিংড়ি মাছ নানান রকম ভাবে কুমড়ো খাওয়া যেতে পারে। এটি নিয়মিত খেলে ত্বক ও চুল ভালো থাকবে।
সেকালের বিয়ে বাড়ি মানেই জলখাবারে কলাপাতায় বড় বড় লুচি আর কুমড়োর ছক্কা। এখনো পুরনো দিনের বনেদিয়ানা বজায় রাখতে অনেক বিয়ে বাড়িতেই বা পুজো বাড়িতে মেনু এমনটাই হয়ে থাকে। তাই কুমড়োর ছক্কা খুব একটা আধুনিক খাবারের মধ্যে একদমই পড়ে না। এটি যথেষ্ট ঐতিহ্য বহন করে। উনিশ শতকের মাঝামাঝিতে মধ্যবিত্ত গৃহস্থ বাঙালির বিয়ে বাড়ির খাবারের বর্ণনা করতে গিয়ে মহেন্দ্র দত্ত বলেছেন ‘কলা পাতায় বড় বড় লুচি আর কুমড়োর ছক্কা। কলা পাতার এক কোণে একটু নুন, মাসকলাই ডালের পুর দেওয়া মৌরি দিয়ে কচুরি, নিমকি, ভাজা চৌকো গজা মতিচুর এইসব সরায় থাকিত। আর চার রকম সন্দেশ থাকিত।’ আঘাত আগেকার দিনের মানুষ না খেয়ে হজম করতে পারতেন। এখনকার দিনের মতো মুঠো মুঠো অ্যান্টাসিড খেতে হতো না। হয়তো তখনকার দিনের পরিস্থিতি পরিবেশ এই হজমের ব্যাপারে অনেকখানি ভূমিকা নিত। সেই অভিজাত্যের ছোঁয়াতে একটু স্মরণ করে, চলুন আজ শিখেনি ‘কুমড়োর ছক্কা’।
কুমড়োর ছক্কার উপকরণঃ কুমড়ো টুকরো টুকরো করে কেটে নেওয়া, আলু টুকরো করে কাটা, দুটি তেজপাতা, ১টি শুকনো লঙ্কা, ১টেবিল চামচ সরষের তেল, ১ টেবিল চামচ ঘি, ১ কাপ ভেজানো ছোলা , চিনি, আদা বাটা, আস্ত জিরে, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো
প্রণালীঃ কুমড়ো আর আলুর ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে ডুমো ডুমো করে কেটে নিতে হবে। কড়াই এর মধ্যে সরষের তেল গরম করতে দিতে হবে। তেল গরম হয়ে গেলে তাতে তেজপাতা শুকনো লঙ্কা এবং গোটা জিরে ফোড়ন দিতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে তারপরে কিছুক্ষণ পরে কুমড়ো এবং আলুর টুকরোগুলো দিয়ে লাল লাল করে ভেজে নিতে হবে। ভাজা ভাজা হয়ে গেলে হাফ কাপ জল দিয়ে গ্যাস কমিয়ে জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, আদাবাটা দিয়ে সব মশলা একসাথে কষতে হবে। মশলা করতে করতে যতক্ষণ না তেল ছেড়ে যাচ্ছে, তারপর আলু, কুমড়ো সেদ্ধ হবার মতন জল দিয়ে চাপা দিতে হবে। তারমধ্যে দিয়ে দিতে হবে কাঁচা ছোলা গুলি। জল শুকিয়ে ঘিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন ‘কুমড়োর ছক্কা’।