শ্রেয়া চ্যাটার্জি- গোটা বিশ্বের যখন প্রত্যেকটা জায়গাতে চেষ্টা করা হচ্ছে করোনা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় ঠিক সেই সময় চোখে পড়লো একদল নারী মাঠের মাঝখানে বসে করোনা দেবীর পুজো করছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, আসামে। বিশেষত নারীরাই এই পুজোয় অংশগ্রহণ করছেন। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক দেবীর পুজো হচ্ছে সেই দেবীর নাম ‘করোনা দেবী’। প্রত্যেকে যেন করোনা থেকে মুক্তি পায়, এই আশা নিয়েই তারা পুজোটা করছেন। পুরোহিত সুরজিৎ চক্রবর্তী জানান, “এই পুজো করার জন্য নারীরা সূর্যকে সাক্ষী করে সারাদিন উপোস করে থাকছেন।” দরং, গৌহাটি কেউ নারীরা মেতে উঠেছে করোনা পুজোয়। তারা পুজোটা করছেন কোন এক নদীর ধারে কিংবা কোন এক মন্দিরে অথবা কোন এক বড় গাছের তলায়।
সেখানে আবার করোনা দেবী, ‘করোনা মা’ নামে পূজিত হচ্ছেন। তাদের ধারণা, পুজোর শেষে একটা হাওয়া আসবে যা করোনাভাইরাস কে মেরে ফেলবে। এরপরে এগুলি বিহার, নালন্দা, গোপালগঞ্জ, বৈশালী, মোজাফফরপুর, গ্রামের মহিলারা করতে শুরু করেন। গোপালগঞ্জের মহিলারা একটি অদ্ভুত নিয়ম করে করোনা দেবীর পুজো করছেন। মাটির মধ্যে সাতটি গর্ত করছেন এবং সেইসাথে গর্তের মধ্যে গুড়ের জল ঢালছেন, গুড়ের জল এর মধ্যে থাকছে লবঙ্গ, দারচিনি, ফুল এবং সাতটি লাড্ডু। অনেক জায়গাতেই আবার করোনা দেবীকে তুষ্ট করার জন্য ‘পোহা’ বা চিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে।
ভারতবর্ষে চিরকালই কুসংস্কার বিষয়টি স্থান পেয়েছে। অতীতেও দেখা গেছে এখন শিক্ষিত সম্প্রদায় বেশি হলেও কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভারত কিন্তু এখনো মুক্তি পায়নি। না হলে গোটা বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস এর ওষুধ তৈরি করবে বলে পাগল পাগল অবস্থা, সেই মুহূর্তে কিনা ভারতবর্ষে চলছে করোনা দেবীর পুজো। এসব ক্ষেত্রে মানুষগুলোকে বুঝিয়েও কোন কাজ হবে না যে এসব করলে করো না যাবে না। যেখানে বিজ্ঞান হার মেনেছে, সেখানে পুজো করে কি হবে?