শ্রেয়া চ্যাটার্জি – ‘কচ্ছপ’ কথাটি মনে পড়লেই একটি ধীর গতির প্রাণী গায়ের উপরে শক্ত খোলস দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এমন দৃশ্যই চোখে ভেসে ওঠে। শক্ত খোলস দ্বারা আবৃত কচ্ছপের শ্রেণীর মধ্যে তিন প্রকারের কচ্ছপ জানা যায় যেমন Turtle, Tortoise, Terrapin। Turtle, বাংলায় যা কাছিম নামে পরিচিত এরা সমুদ্রে বাস করে। Tortoise, বাংলায় যা কচ্ছপ নামে পরিচিত এরা জমিতে বাস করে। Terrapin, এরা পরিষ্কার জলে বাস করে। এরা প্রত্যেকে ফুসফুসের সাহায্যে শ্বাস প্রশ্বাস নেয়। এদের দেহের ওপরে থাকা শক্ত খোলস দুটি ভাগে বিভক্ত একটি পেছনের অংশ ঢাকা পড়ে আর সামনের অংশের সাহায্যে এরা বিপদ বুঝে মুখ লুকোয়। মাথা, গলা, লেজ আর পা বাইরে বার করে রাখে।
কচ্ছপের দৃষ্টিশক্তি, স্পর্শ শক্তি, স্বাদশক্তি প্রবল। কিন্তু শ্রবণশক্তি খানিকটা দুর্বল। এরা সব ধরনের খাবার খায়। নারীর গলার স্বর ‘হিসিং’ পুরুষের গলার স্বর ‘গ্রান্ট’। সাধারণত ৪৫০ কিলোগ্রাম। সবচেয়ে বড় তথ্যানুযায়ী, ৬৮০ কিলোগ্রাম কচ্ছপের খোঁজ পাওয়া গেছে। কচ্ছপ দীর্ঘায়ু হয়। ১৯০৮ সালে জার্মান শরীরবৃত্তবিদ ম্যাক্স রাবনার প্রাণীর আয়ু নিয়ে একটা সূত্র উপস্থাপন করেছেন, তিনি বলেছেন, প্রাণীর বিপাক প্রক্রিয়া যত দ্রুত, তার আয়ু তত কম। তবে এই তথ্যের ওপর আস্থা অনেকেই রাখেননি। আলিপুর চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা দাবি করেন ‘আদৃতা’ সবথেকে দীর্ঘায়ু প্রাণী। ২০০৬ সালে ২৩শে মার্চ মারা যায়। ১৮৭৫ সালে আলিপুর জুওলজিকাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠার সময় তাকে নিয়ে আসা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১৫০ বছর মতান্তরে ২৫০ বছর ।
সবুজ কচ্ছপের স্যুপ বানানো হয়। এই কচ্ছপ পাওয়া যায় ট্রপিক্যাল সমুদ্রে। সাধারণত ২২৫ কিলোগ্রামের মতন হয়। হক্সবিল কচ্ছপের খোলস বেশ দামী। এটি হলো সমুদ্রের সবচেয়ে ছোট কচ্ছপ। এক মিটারের বেশি লম্বা খুব কম পাওয়া যায়। সবচেয়ে বড় উত্তর আমেরিকার কচ্ছপ হলো ‘অ্যালিগেটর স্নাপিং টারটেল’। এই প্রজাতির কচ্ছপ এর বেশ লম্বা লেজ রয়েছে, শক্তপোক্ত তীক্ষ্ণতা রয়েছে। নর্থ আমেরিকান ল্যান্ড টারটেল বেশ বন্ধু পাতাতে পারে। কচ্ছপ গোটা শীতকাল নিজেকে পুকুরের মধ্যে অথবা মাটির নিচে লুকিয়ে রাখে।