কলকাতা: বাসে করে দূরপাল্লায় যাতায়াত করা যাত্রীদের জন্য এক অভিনব ভাবনা ভাবল রাজ্য সরকার। দূরপাল্লায় যাতায়াত করার সময় বাসগুলো জাতীয় সড়কের ওপর থাকা একটা বা দুটো ধাবায় মাঝেমাঝে থামে। তবে সেই ধাবায় অনেক সময় খাবার শেষ হয়ে যায়। আবার অনেক সময় এমন খাবার থাকে, যা খেতে ভাল লাগে না। খাবার শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে খালি পেটেই অনেক সময় আবার বাসে উঠতে হয় যাত্রীদের। আর যদি বলা হয় শৌচালয়ের কথা, তাহলে সেই নিয়ে যত আলোচনা কম করা যায় ততই ভাল। এতটাই অপরিষ্কার একবার গেলে ওইসব শৌচালয় আর দ্বিতীয় বার আর ব্যবহার করতে ইচ্ছে করবে না। আর তাই এসমস্ত কথা মাথায় রেখে রাজ্যের বিভিন্ন জাতীয় সড়কে বেশ কয়েকটি বাস হাব তৈরি করার কথা ভাবল রাজ্য পরিবহণ দফতর।
এই বাস হাবগুলিতে থাকবে বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা। খাবারের জন্য থাকবে ফুট কোট, রেস্তোরাঁ এমনকি প্রিয়জনের সঙ্গে যাত্রা করার সময় চাইলে আপনি আপনার পছন্দের গিফট দিতে পারবেন। বাস হাবগুলিতে থাকা গিফটের দোকান থেকে থাকবে আধুনিক শৌচালয় যা অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সুতরাং, ট্রেনের মত বাসে করে আপনারা দূরপাল্লায় কোথাও যাওয়ার সময় যাতে সাধারণ মানুষদের যাত্রা আরও সুখকর হয়, সে কথাই ভাবতে চলেছে রাজ্য সরকার।
জানা গিয়েছে, ওই বাস হাবগুলিতে শুধুমাত্র সরকারি বাস নয় প্রাইভেট গাড়িতে করে যাতায়াত করা যাত্রীরাও গাড়ি থামিয়ে সেখানে বিশ্রাম নিতে পারবে। এমনকি থাকবে গাড়ি পার্কিং-এর সুবিধা। এ বিষয়ে রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘আপাতত প্রকল্পের সূচনা হিসেবে দক্ষিণবঙ্গে অন্তত ছটি বাস হাব তৈরি করার পরিকল্পনা করেছি আমরা। দূরপাল্লার যাত্রীরা সেখানে নিজের প্রয়োজনমতো রিফ্রেশমেন্ট পেতে পারে। সেই ব্যবস্থাই প্রত্যেকটা বাস হাবে করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা মিলে এই প্রকল্পের কাজ করবে। খুব বেশি এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লাগবে না বলেই আমরা আশাবাদী।’
এবার দেখে নেওয়া যাক কোথায় কোথায় এই বাস হাবগুলি তৈরি করার কথা ভেবেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর।
● কলকাতা ও পূর্ব মেদিনীপুরের মধ্যে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি বাস হাব তৈরি হবে।
● বর্ধমানের ৭ নম্বর রাজ্য সড়কের ধারে তৈরি হবে বাস হাব।
● ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে তৈরি হবে আর একটি বাস হাব।
● ১৪ নম্বর রাজ্য সড়কে তৈরি হবে এই বাস হাব।
● আর দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে তৈরি করা হবে একটি বাস হাব।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের জন্য টেন্ডার ছাড়া হয়েছে। প্রত্যেকটি বাস হাব পাঁচ একর জমিতে তৈরি করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সুতরাং, সব মিলিয়ে এই বাস হাব্গুলি তৈরি হলে দূরপাল্লায় যাওয়ার ক্ষেত্রে যাত্রীদের একটা সুবিধা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।