নয়াদিল্লি: যেখানে করোনার সংক্রমণ ছোযাচে হওয়ার ফলে আপনজনের এই রোগের সংক্রমণ হলেও হাসপাতালে দেখতে যেতে পারে না পরিবার-পরিজন। এমনকি এক বাড়িতে থেকে চোখের সামনে সেবা করে পরিবারের লোককে সুস্থ করাও যায় না এই রোগের ক্ষেত্রে, সেখানে নিজের জীবনকে কার্যত করোনা রোগীদের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন আরিফ। সিলামপুরের বাসিন্দা এই আরিফ খান রাজধানীর বুকে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দিয়ে শহীদ ভগৎ সিং সেবাকেন্দ্রে কাজ করতেন। করোনাকালে যখন দেশের অবস্থা সঙ্কটজনক, তখন বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্সে করে করোনা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই শুধু নয়, সেই রোগীরর করোনায় মৃত্যু হলে তার শেষকৃত্যের খরচ অনেক সময় নিজের পকেট থেকেই যোগাতেন আরিফ। তবে শেষমেষ এই করোনার কবলে পড়ে চির বিদায় নিতে হয়েছে তাঁকে। জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত করোনা রোগীদের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা আরিফ নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। আর এরকম এক করোনা যোদ্ধাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
গত ৬ মাসে নিজের প্রিয়জনদের ভুলে সংক্রমণে আক্রান্ত মানুষগুলির জন্যই কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই কাজ করে গিয়েছেন দিল্লির এই অ্যাম্বুলেন্স চালক ৷ সিলামপুরের বাসিন্দা আরিফ প্রায় ২০০ জন করোনা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর পরে শেষকৃত্যের কাজও করেছেন তিনিই ৷ ২৪ ঘণ্টা করোনা রোগীদের পাশে থাকতেন । শেষ পর্যন্ত সেই করোনা সংক্রমণই কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ৷
আরিফ এর মাসিক বেতন ছিল ১৬ হাজার টাকা। তিনি পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন। তাঁর অকাল প্রয়াণে কার্যত অথৈ জলে পড়ে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা। আর এরকম করোনা যোদ্ধার পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন রাষ্ট্রপতি। বাড়িয়ে দিয়েছেন আর্থিক সাহায্যের হাত। আজ, শনিবার সেই টাকার চেক আরিফের স্ত্রীর হাতে তুলে দিতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন জেলাশাসক শাহদারা।