কলকাতা: আজ, বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠী। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই মা দুর্গার আরাধনা শুরু হয়ে গিয়েছে। করোনা আবহের মধ্যে কলকাতায় থিমের প্রভাব রয়েছে এবারের পূজোতেও। উত্তর কলকাতায় অন্যতম জনপ্রিয় পুজো হচ্ছে জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো। আর এবার সেখানে থিমে উঠে এসেছে শিল্পী অশোক গুপ্তর শিল্পীসত্ত। কার্যত অশোক গুপ্তর শিল্পীসত্তাকে সম্মান দেওয়ার জন্যই এই অভিনব ভাবনা ভেবেছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
শিল্পী অশোক গুপ্তকে বাংলার প্রথম থিম-শিল্পী বললে ভুল হয় না। ১৯৫৯ সাল। খাদ্য আন্দোলন দেখে ফেলেছে বাংলা। দেখেছে ৩১ অগাস্টের শহিদদের। সেবারের পুজোয় প্রথমবার চমক দিলেন তিনি। খাদ্য আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গড়লেন দুর্গা। জগত মুখার্জি পার্কের এবারের প্রতিমা শিল্পী সুবল পাল বলেন, ‘উনি ৫৯ সালে প্রথম সাবেকি দুর্গার আদল ভেঙে একবারে তৎকালিন ঘটনার প্রেক্ষাপটে দুর্গা নির্মাণ করেছিলেন।’ অশোক গুপ্তের ছাত্র এবং ওই পাড়ার ছেলে শিল্পী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ সমসাময়িক সময় তো ছিলই, তার সঙ্গে তাঁর কাজের মধ্যে ফুটে উঠত ধ্রুপদ রূপ। যেন মনে হত ক্ল্যাসিকাল মিউজিক শুনছি।’
ফ্ল্যাট-ক্যানভাসে রিলিফ ওয়ার্কের কাজ। ভারতীয় ঘরানার পেইন্টিং, যেন প্রবলভাবে অবন ঠাকুর, নন্দলাল বসুর স্টাইল। শিল্পী সুবল পাল বলেন, ‘প্রথমে দরমায় কাঁদা লেপে ব্লক তৈরি করতেন। তার উপরে রংয়ের অসাধারণ ব্যবহার। দেখলে মনে হত 3D পেন্টিং দেখছেন । দুর্গার মধ্যে একটা পুরুষালি ব্যাপার ছিল। যেহুতু শক্তির উৎস তাই ওঁর ব্যাখ্যা ছিল, ১০ জন পুরুষ মিলে যাকে তৈরি করেছে তার মধ্যে পুরুষালি ব্যাপারটা থাকবে না। সব মিলিয়ে এক অভিনব থিম হয়েছে এবার জগৎ মুখার্জী পার্কে। কিন্তু হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তাতে থিম করেও কী কোনও লাভ হবে? কারণ, মণ্ডপ থাকবে সেই দর্শকশূন্যই।