আজ থেকে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করেছে রেল রাজ্য। প্রায় অনেক দিন ধরে কলকাতা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা অজস্র মানুষ আজ ফের শহরে যাতায়াত শুরু করতে পারবে লোকাল ট্রেনের দৌলতে। কিন্তু সুরাহা হয়নি হকারদের। কোভিড প্রটোকল অনুযায়ী, হকাররা স্টেশন চত্বরে জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারবে না। এমনকি ট্রেনে উঠে জিনিস বিক্রি করাও নিষিদ্ধ। এই লোকাল ট্রেনে বা স্টেশন চত্বরে হকারদের বিক্রি-বাট্টা বন্ধ করায় প্রশ্ন উঠছে তারা কি করে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করবে। এর আগে প্রায় সাত মাস ট্রেন না চালায় তাদের তেমন কোন ব্যবসা হয়নি। এবার ট্রেন চললেও তাদের ব্যবসার পথ সেই বন্ধ। তাই হতাশা পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, “ট্রেন তো চালু হল, আমাদের কি হবে?”
আজ বুধবার লোকাল ট্রেন চালু হলে বিভিন্ন স্টেশনে বেশ ভালই ভিড় দেখা গিয়েছে। প্রতি ট্রেনে রাজ্য সরকার ৬০০ জন যাত্রী ওঠার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তাতে জায়গা নেই হকারদের। এমনকি স্টেশন চত্বরে তারা বসে জিনিস বিক্রি করতে পারবে না। এছাড়াও স্টেশনের খাবার স্টলগুলিও সব বন্ধ। যাত্রী সুরক্ষার কথা ভেবেই হয়তো রাজ্য প্রশাসন হকারদের ট্রেনে না ওঠার নির্দেশ দিয়েছে।
নির্দেশ মতো এদিন ব্যস্ততম স্টেশন শিয়ালদহ স্টেশনে সমস্ত স্টলগুলিকে বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। তবে তা সত্বেও স্টেশনে হকারদের উপস্থিত যাত্রীদের হাতে স্যানিটাইজার স্প্রে করতে দেখা গেছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে তারা কেন যাত্রীদের হাতে স্যানিটাইজার দেওয়ার কাজ করছে? উত্তরে এক হকার বলেছে, “করোনাভাইরাস থেকে যাত্রীদের সুরক্ষা দেওয়া তাদের একমাত্র কাজ। যত তাড়াতাড়ি এই করোনা দেশ থেকে বিদায় নেবে, তত তাড়াতাড়ি তারা তাদের সাধারন জীবন জীবিকা নির্বাহের পথে আসতে পারবে”।
এবার তাহলে প্রশ্ন উঠছে, যাত্রী সুরক্ষার কথা ভেবে ট্রেন পরিষেবা চালু হলেও তাহলে হকারদের ভবিষ্যৎ কী? ইতিমধ্যেই তারা ৮ মাস রুজি রোজগারহীন হয়ে জীবন যাপন করছে। এরপরও তারা স্টেশন চত্বরে জিনিসপত্র বিক্রি করতে না পারলে তারা তাদের দুবেলা খাবার জুটিয়ে নেবে কি করে? এই নিয়ে রাজ্য সরকার আদেও কিছু ভাবছে নাকি সেটাই জানার দরকার। প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র শিয়ালদহ স্টেশনে প্রায় ১ হাজার হকার নিত্যদিন জিনিসপত্র বিক্রি করে। এবার “নিউ নরমালে” শেষ পর্যন্ত তাদের ভবিষ্যৎ কী সেটাই দেখার।