নয়াদিল্লি: গত ২২ মার্চ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথমবার বক্তব্য রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর সেদিন সকলকে জনতা কারফিউ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তারপর বিকেলে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জন্য শ্রদ্ধা দিয়ে যে বক্তব্য তিনি পেশ করেছিলেন, তাতে তিনি ঘোষণা করেছিলেন লকডাউনের কথা। তারপর একে একে বা বলা ভাল ধাপে ধাপে লকডাউন প্রক্রিয়া বাড়তে থাকে। তারপর জুন মাস থেকে ধীরে ধীরে আনলক প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশের করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। দিল্লিতে চলছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। দূষণের জন্য দৃশ্যমানতা তলানিতে এসে ঠেকেছে। তার উপর করোনার বাড়বাড়ন্ত নাজেহাল করে রেখেছে দিল্লিবাসীর দৈনন্দিন জীবন। তাই প্রশ্ন উঠছে দেশ কি ফের লকডাউনের পথে হাঁটতে চলেছে? সূত্রের খবর, দেশ জুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউন না হলেও আংশিক লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে দেশের একাধিক শহর। এমনকি বন্ধ হতে পারে ট্রেনের অবাধ চলাচল ও বিমান পরিষেবা।
দীর্ঘ লকডাউনের পর জীবন-জীবিকা বাঁচাতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে জনজীবন। চলছে লোকাল ট্রেনও। বহু রাজ্যেই এখনও খোলেনি স্কুল-কলেজ। তবে দেশে করোনা আক্রান্ত পার করেছে ৯০ লক্ষ। বলা ভাল সংক্রমনের নিরিখে এক কোটির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৮৪ জনের। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ১,৩২,১৬২।
দেশের একাধিক শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। দিল্লিতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মাস্ক না পরলে ২ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এমনকি দিল্লিতে লকডাউন শুরু হয়েছে বলেও বিশেষ সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে গুজরাটের আহমেদাবাদ ও মধ্যপ্রদেশের ভোপালে পরিস্থিতি সংকটজনক। আহমেদাবাদে লাগু রয়েছে অনির্দিষ্টকালীন রাত্রিকালীন কার্ফু। শনি ও রবিবার কার্ফু জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি। রাজস্থানের সমস্ত জেলায় শনিবার থেকে জারি হচ্ছে ১৪৪ ধারা। ভোপালেও কার্ফুর জারির কথা ভাবছে প্রশাসন।
দিল্লির সঙ্গে বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করার কথা ভাবছে মহারাষ্ট্র সরকার। এর পাশাপাশি পন্ধরপুরে জারি হতে পারে কার্ফু। মুম্বইয়ে সমস্ত স্কুল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকার ঘোষণা করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে সুর চড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন এটাই জানান দিচ্ছে যে, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি বেশ ভাল।। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যেখানে লোকাল ট্রেন চালু হয়ে গিয়েছে, মেট্রো পরিষেবা চলছে সেখানে সত্যিই কি রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ভাল হওয়ার কথা? নাকি আসল সত্যিটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আগামী দিনে দেশের অন্যান্য শহরে পাশাপাশি কলকাতার পরিস্থিতি কী হয়, এখন সেটাই দেখার।