নয়াদিল্লি: গত লোকসভা ভোটের আগে যেভাবে রাহুল গান্ধী গর্জেছিলেন, সেভাবে কংগ্রেস ফল পায়নি। কার্যত বিজেপির সামনে হারের মুখ দেখতে হয়েছিল বহ প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলকে। এক বছর পর বিহার বিধানসভা নির্বাচনে সেই একই চিত্র দেখা গিয়েছে। যেখানে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া বামেরা অপ্রত্যাশিতভাবে ভাল ফল করেছে, সেখানে প্রত্যাশিতভাবে ভাল ফল করতে পারেনি কংগ্রেস। এর কারণ হিসেবে গুলাম নবি আজাদ দাবি করেছেন ‘পাঁচতারা সংস্কৃতি’ কংগ্রেসের ভোটে হারের মূল কারণ। নির্বাচন না করে যতদিন কংগ্রেসের অন্দরে মনোনয়নের মাধ্যমে পদাধিকারী ব্যক্তিদের বেছে নেওয়া হবে, ততদিন এই লজ্জার হারের মুখ দেখবে কংগ্রেস। এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন যে, কংগ্রেসের উচু তলার স্থানীয় নেতা-নেত্রীরা নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গে সংযোগ করে তুলতেই পারেন না। যার ফলে এই হারের মুখ দিনের পর দিন দেখতে হচ্ছে।
এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এ প্রসঙ্গে গুলাম নবি আজাদ বলেছেন, ‘ভোটে হারের জন্য মূলত স্থানীয় নেতৃত্ব দায়ী। জেলা স্তরে বা ব্লক স্তরে স্থানীয়ভাবে যে সকল নেতারা মনোনয়নের মাধ্যমে পদে বসেন, তাদের সঙ্গে মানুষের কোনও যোগ নেই। তারা মানুষের সঙ্গে যোগ হারিয়ে ফেলেছেন। যেখানে একটা নির্দিষ্ট পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে মানুষকে পুনরায় কংগ্রেসমুখী করে তোলার কথা, সেখানে কোনও ব্যক্তি রাজনৈতিক পদ পাওয়ার পরই নিজের নামে লেটার প্যাড, নেমপ্লেট, ভিজিটিং কার্ড ছাপাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারা মনে করেন, তাদের সমস্ত কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আসল কাজটা যে এখান থেকেই শুরু হয়, সেটা তারা ভুলে গিয়েছেন।
তবে ভোটে হারের জন্য স্থানীয় নেতৃত্বকে দায়ী করলেও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে দ্বরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন গুলাম নবি আজাদ। তিনি বলেছেন, ‘সোনিয়াজি কোনও ভুল করেননি। তিনি নিজের সিদ্ধান্তে একইভাবে অবিচল রয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় নেতারা যা করছে, তা ঠিক করছে না। তবে এতে তাঁর কোনও দোষ নেই।’ এভাবেই বিহার ভোটে কংগ্রেসের হারের কারণ বিশ্লেষণ করেন আজাদ।