চণ্ডীগড়: সত্তিকারের ভালবাসা বোধ হয় একেই বলে। প্রকৃত ভালবাসা যে শারীরিক নয়, মানসিক হয়, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল এই ভালবাসার কাছে সব প্রতিবন্ধকতাই হার মেনে যায়, হুইল চেয়ারে বসা প্রেমিককে স্বামী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন চণ্ডীগড়ের এক তরুণী মাধ্যমে। একে অপরকে ভালবেসে কী না করা যায়। হাসতে হাসতে জীবন যেমন দিয়ে দেওয়া যায়, তেমন নিজের জীবনের সঙ্গে ভালবাসার মানুষটির জীবন আমৃত্যু জড়িয়ে ফেলা যায়। এমনই এক দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা ঘটেছে চণ্ডীগড়ে৷ গতকাল, সোমবার হুইল চেয়ারে বসা বিশেষভাবে সক্ষম এক ব্যক্তির সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন একেবারে ‘সুস্থ’ তরুণী৷ আর এই ঘটনা যেসব মানুষরা ভালবাসার বিরোধিতা করে, সেই সব মানুষদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে ভালবাসলে কী না করা যায়?
২৯ বছরের রাহুল ২০১৬ সালে একটি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলেন৷ তারপরেই হুইল চেয়ারই ভরসা হয় তার৷ সেই রাহুলকে ভালবেসে জীবনসঙ্গী বেছে নিলেন অনামিকা৷চণ্ডীগড়ের স্পাইন রিহ্যাব সেন্টারে বসেছিল এই বিয়ের মেগা আসর৷ দুর্ঘটনার পর রাহুলের নিম্নাঙ্গ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছিল৷ তারপর থেকে হুইল চেয়ারই রাহুলের দৈনন্দিন সঙ্গী হয়ে উঠেছে৷ অন্যদিকে অনামিকা একেবারে সুস্থ তবু রাহুলকে সত্তিকারের ভালবেসে তার শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে নিজের নতুন জীবনের সঙ্গে রাহুলকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে জড়িয়ে ফেলেছেন তিনি৷
ছোটবেলা থেকে রাহুল এবং অনামিকা প্রতিবেশী ছিল৷ ২০০৮ সাল থেকে তারা একে অপরকে ভালবাসতে শুরু করে। কিন্তু সেই ভালবাসার মধ্যে ছন্দপতন ঘটায় রাহুলের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনা। যদিও অনেক আত্মীয়-পরিজনরা ভেবেছিল অনামিকা হয়তো এই দুর্ঘটনার কবলে পড়া রাহুলকে নিজের জীবনে আর মেনে নেবেন না। কিন্তু সকলকে ভুল প্রমাণ করে দুর্ঘটনাকে প্রাধান্য না দিয়ে নিজের ভালবাসাকে গুরুত্ব দিলেন অনামিকা। তাই সকলের একটাই কামনা, সারা জীবন অটুট থাকুক ওদের দুজনের ভালবাসা।