সম্প্রতি মাঝেরহাট ব্রিজ দেরিতে চালু অভিযোগে রাজ্যে তৃণমূল বিজেপির দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্রিজ দেরিতে চালু করার জন্য বিজেপি তৃণমূলকে দোষ দিতে চায়, আবার অন্যদিকে তৃণমূল এই দেরির জন্য আঙুল তুলেছে রেলের বিরুদ্ধে। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ। এই নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রবল চাপানউতোর চলছে।
গতকাল মাঝেরহাট ইস্যু নিয়ে তারাতলা বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। অনুমতি না নিয়ে মিছিল করার জন্য প্রথমে পুলিশ তাদের বিক্ষোভ তুলে নিতে বলে এবং পরে বিক্ষোভ না উঠলে পুলিশ বিজেপির নেতা কর্মীদের ধস্তাধস্তিতে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। আবার পাল্টা পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশের লাঠির আঘাতে এক বিজেপি কর্মীর মাথা ফাটে ও অনেকেই জখম হন। তারপর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কৈলাস বিজয়বর্গীয় সেখানে উপস্থিত ধরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। অবশ্য পুলিশের দাবি, কৈলাসকে গ্রেফতার করা হয়নি। সে নিজে থেকেই পুলিশ ভ্যানে উঠে যায়।
এরপর এই ইস্যুতে মুখ খোলেন তৃণমূল নেতা অরূপ বিশ্বাস। তার দাবি, রেলের টালবাহানার কারণেই দেরি হয়েছে সেতু তৈরির কাজ। দেরি হওয়ার দায় তাই কেন্দ্রের। অন্যদিকে রেল এই অভিযোগ মানতে নারাজ। বরং উল্টো তারা বলেছে, রাজ্য সরকার নকশা পরিবর্তন করে জমা দেয়ার পর সেই নকশায় বহু জায়গায় ভুল ছিল। রাজ্যের নকশা পরিবর্তন করার পর কমপক্ষে ২৯ জায়গায় ভুল সংশোধন করতে হয়েছে রেলকে। তাই রেলের অভিযোগ, এত ভুল সংশোধন করার জেরেই দেরি হয়েছে নির্মাণ কাজ শুরু করতে। তবে রেল এই বিষয়ে সরকারিভাবে কিছু বলতে নারাজ। সামনে নির্বাচনের আগে আর কোনো বিতর্কে জড়াতে চায় না রেল।
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঝেরহাট ইস্যু নিয়ে বলেছেন, “মাঝেরহাট সেতুর কাজে দেরি হয়েছে কেন্দ্রের জন্য! কেন্দ্রের রেল যখন ৯ মাস অনুমতি দেয়নি, তখন বিজেপি কি করছিল?” বাংলায় বহিরাগতদের জায়গা নেই বলেও মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই এই ঘটনায় সরব হন আরেক বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অমিত মালব্য। তিনি বলেছেন, “মাঝেরহাট ব্রিজ না খোলার তৃণমূলের বাহানাকে ইতিমধ্যেই নস্যাৎ করেছে পূর্ব রেল। নির্বাচনের আগে ব্রিজ উদ্বোধনের জন্য এই অযথা দেরি এবং টালবাহানা মানুষকে সমস্যায় ফেলছে।”