১৫ বছরের ছেলে আমার শরীর ছুঁতে চেয়েছিল, সুস্মিতা সেন ফাঁস করলেন গোপন কথা
সেদিন সুস্মিতা চাইলে ছেলেটিকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারতেন অথবা তার ক্যারিয়ার জন্মের মতন শেষ করে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেদিন তা করেননি। শরীরে ১৫ বছরের কিশোরের অঘোষিত এবং আকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ একেবারেই মেনে নেওয়ার নয়। তাই তিনিও মেনে নেননি, প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন কিন্তু কোথাও গিয়ে তার শাসন, তার ধমক, তার দেওয়া শাস্তি আজও স্মরণীয় এবং কুর্নিশ যোগ্য। ‘অসুর’ এর গল্পের মত সুস্মিতা সেন এখানে ধনঞ্জয় রাজপুত হয়ে ওঠেননি আর ওই ১৫ বছরের কিশোরটি অসুরে পরিণত হয়নি।
২০০০ সালে এক কন্যাকে দত্তক নেন সুস্মিতা। সেদিন থেকেই যে তিনি ‘মা’। সেদিন সুস্মিতা তার নিপুন হস্তে ওই ১৫ বছরেও বালকটিকে শাসন করেছিলেন। ব্যাপারটা যদি খুলেই বলি- একটি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সুস্মিতা সেন গিয়েছিলেন, তাঁর অবশ্যই বডিগার্ড ছিল। কিন্তু এই বডিগার্ডদের চক্ষুর আড়ালে একটি ১৫ বছরের কিশোরের হাত স্পর্শ করে সুস্মিতা সেনের শরীর। সেদিন তিনি বুঝেছিলেন এবং বোঝার পর ওই ছেলেটির হাত পেছন থেকে ধরে টেনে সামনে আনেন। এরপর হাতের বাহু দিয়ে ছেলেটির ঘাড় আঁকড়ে ধরেন সুস্মিতা। তিনি যখন ছেলেটিকে সামনে আনলেন তখন দেখে অবাক। মাত্র ১৫ বছর বয়স! যাইহোক সেদিন তিনি ভিড়ের মধ্যে দিয়ে ছেলেটিকে টেনে হিড়হিড় করে নিয়ে যান। দুঃখ প্রকাশ করেন যে তার বয়স মাত্র ১৫ বছর। সেদিন সুস্মিতা বলেছিলেন যদি তিনি চেঁচামেচি করেন তাহলে তার জীবন এখানেই শেষ হয়ে যাবে। ওই বালকটিকে সেদিন তিনি ‘বাচ্চা’ বলে সম্বোধন করেন।
সেদিন এই মিস ইউনিভার্স আরো বলেন, “প্রথমে সে দোষ স্বীকার করতে চায় নি। কিন্তু যখন বললাম তুমি করেছ, স্বীকার কর, তখন সে স্যরি বলল। আবারও বললাম, তুমি কি জানো যে তোমার জীবনের এখানেই নষ্ট করে দিতে পারতাম? তাতে সে বলল, কথা দিচ্ছি এমনটা কখনও হবেনা। শেষে বললাম, করার চেষ্টা করলে মুশকিলে পড়বে কারণ তোমার মুখ আমি চিনে নিয়েছি। বেরিয়ে যাও এখান থেকে।”
হ্যাঁ, সেদিন সুস্মিতা ওই ছেলেটিকে ছেড়ে দিয়েছিলেন। এখন সে দুই সন্তানের মা। তার থেকে যে এমন বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার, কথা, আচরণ, শিক্ষা পাওয়া যাবে এটাই কাম্য। আমাদের আজকের বিষয় ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানী নয়। ধর্ষণ এবং এই শ্লীলতাহানি বহু বছর ও বহুদিন ধরে চলে আসছে। এখনো এই দেশে কেউ ধর্ষণ করলে তার শাস্তি হয় বহুদিন পরে। দেশের আইন ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। সংবিধানের যেমন যা লেখা থাকবে তেমনভাবেই একটি রাষ্ট্র পরিচালিত হবে, অন্তত ১৯৪৭ এর পর থেকে এমনটাই হয়ে আসছে। তাই নিজ স্বার্থে রুখে দাঁড়ানো উচিত আমাদের প্রত্যেকের। অন্যায়ের পরিবর্তে এভাবেই হয়তো রুখে দাঁড়ালে আজকের দিনের মেয়েরা স্বয়ংসিদ্ধা হয়ে উঠতে পারেন। কোন আইনকে অবহেলা নয়, কিন্তু নিজেকেও অবহেলা নয়। সেদিন যদি ওই ছেলেটির বয়স ১৫ না হয়ে ২৫ হত তবে তার শাস্তি আইনি কাঠগোড়ায় যেত অথবা চূড়ান্তভাবে তার ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হত। কিন্তু সেদিন ওই ছেলেটির বয়স তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল আর সামনে ছিলেন মিস ইউনিভার্স এবং দুই সন্তানের মা সুস্মিতা সেন।