একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূল দল অন্তর্দ্বন্দ্ব সমস্যায় জর্জরিত। বেশ কিছুদিন আগে থাকতেই নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে চলছে প্রবল গোলযোগ। তারপরেই আবার তৃণমূলের আরেক মন্ত্রী দল ছেড়ে যাবে বলে শুরু হয়েছে জল্পনা। শুভেন্দুর পর তৃণমূলের নতুন বিদ্রোহী সিপাহী হয়তো বন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল রাজ্য সরকারের এই মন্ত্রীর মুখে প্রসঙ্গত পুরো উল্টো সুর শোনা গেছে। তিনি দল নিয়ে যে খুবই হতাশ তা স্পষ্ট। আর এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে ভোলেননি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
গতকাল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে তার মনের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। হতাশার সুরে বলেছেন, “যারা যোগ্যতার সাথে দলে কাজ করছে তারা কোনোভাবেই প্রাধান্য পাচ্ছে না। প্রাধান্য তো দূরের কথা। দিনে দিনে তাদের রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করে আরো পিছনের সারিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।” রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর এই বক্তব্য ঘিরেই বঙ্গ রাজনীতিতে শুরু হয়েছে আবার নয়া চাপানউতোর। ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় নজরে আসতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর কথার সমর্থনে পোস্টার। এর থেকেই ধারণা করে নেওয়া যায় শুভেন্দু অধিকারীর মত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর সাথেও বাড়ছে তৃণমূল দলের দূরত্ব।
অন্যদিকে সুযোগ বুঝে গরম লোহাতে হাতুড়ি মারতে ভোলেনি রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি তৃণমূলকে কটাক্ষের সুরে বলেছেন, “আস্তে আস্তে তৃণমূল দলের সবাই একে একে মুখ খুলছে। তুমি তো আগেই বলেছিলাম তৃণমূল দলটা আর টিকবে না। ডিসেম্বর মাসটা ওদের জন্য খুব একটা ভালো যাবে না।” অন্যদিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, “রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভালো ছেলে। উনি ওই দলে থেকে আগেও ভালো কাজ করেছেন। কিন্তু উনি আর দলে থাকতে পারছেন না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিনি দলটা ছাড়ুক। দল ছাড়লেন তিনি বিজেপিতে সুস্বাগতম।”
দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, “তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সাথে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে। রাজিব ছাড়াও আরো অন্যান্য অনেক তৃণমূলে নেতা বিজেপি শরণাপন্ন হতে চাইছে। শুভেন্দু দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলাতে অনেকেই সত্যিটা বলার সাহস পেয়েছে।” অন্যদিকে তৃণমূল নেতা অরূপ রায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তিনি বলেছেন, “বিষয়টি নিয়ে অনেক দূরে জল গড়াবে।”