আজ সকাল থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে চর্চার বিষয় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর শহীদ দিবসের দিন নন্দীগ্রাম সফর বাতিল করা। গতকাল রাতেই দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে প্রস্তাবিত জনসভায় যাচ্ছেন না তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বদলে ওইদিন সভায় যাচ্ছেন তৃণমূলের নেতা সুব্রত বক্সী। তারপর থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়েছে কেন মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ করে নন্দীগ্রামের সভা বাতিল করে দিল। অনেকেই বলেছে, শুভেন্দু গড়ে লোক আদবে আসবে নাকি সেই ভয়ে জনসভা বাতিল করা উচিত। তাহলে বাংলার বাঘিনী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি ভয় পেয়ে গেল শুভেন্দুকে?
অবশ্য সমস্ত জল্পনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন সুব্রত বাবু। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৭ তারিখে নন্দীগ্রামে আসছেন না। কিন্তু তিনি খুব শীঘ্রই নন্দীগ্রামে আসবেন।” আসলে ওই জনসভার মূল সংগঠক ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের অন্যতম দাপুটে নেতা ও বিধায়ক অখিল গিরি। কিন্তু তিনি হঠাৎই করণ আক্রান্ত হয়েছেন। তাই তাকে ছাড়া নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেত্রীর সভা করা খুব একটা শোভনীয় নয়। তাই আপাতত শহীদ দিবসে নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রামনগর এর বিধায়ক অখিল গিরির জেলা পরিষদ অধিকারী পরিবারের কট্টর বিপক্ষ। গত দেড় দশক ধরে অখিল গিরির রাজনীতিতে খুব একটা ওজন ছিল এমন নয়। কিন্তু শুভেন্দু দলত্যাগের পর অখিল গিরি বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে তৃণমূল শিবিরে। অপরদিকে আবারো তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতার জায়গা ফিরে পাচ্ছেন নন্দীগ্রামের শেখ সুফিয়ান।
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম জনসভা বাতিল হওয়ায় অনেকেই তা নিয়ে বেশ কটাক্ষ করেছেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “আজ তো নন্দীগ্রামের ৭ তারিখের জনসভা বাতিল করতে হল। এরপর আরো কত সভা বাতিল করতে হবে তা দেখুন আপনারা।” আবার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলেছেন, শুভেন্দু দল ছাড়ছে সেই হুজুগে হঠাৎই মুখ্যমন্ত্রীর নন্দীগ্রাম সফর আয়োজন করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপর ভেবে দেখা হয়েছে এর মাধ্যমে শুভেন্দুকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যার কোন দরকার নেই। অন্যদিকে আরেকাংশ ভেবেছে, শুভেন্দু গড় নন্দীগ্রামে লোক জড়ো করার মতো সাংগঠনিক ক্ষমতা শুভেন্দুর চেয়ে বেশি আর কারোর নেই। তাই এই মুহূর্তে নন্দীগ্রামের জনসভা থেকে পিছিয়ে আসাই ভালো। তবে সব জল্পনা উড়িয়ে কেন মুখ্যমন্ত্রী সফরে আসছেন না তা স্পষ্ট করেছেন সুব্রতবাবু।