পৃথিবীর ধ্বংসের দিন আসন্ন, এরকম কথা বেশ কয়েক বছর ধরেই বলে আসছেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে ২০১২ সালে ২১ ডিসেম্বর, পৃথিবী ধ্বংসের সম্ভাবনা নিয়ে তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল বিশ্ব। কিন্তু সেই হিসাবটি ভুল। এর পর শোনা যায় ২০২০ সালের ২১ জুন সূর্যগ্রহণের দিন পৃথিবী ধ্বংস হতে চলেছে। সেবারও রক্ষা মেলে। এবার শোনা যাচ্ছে শেষের সেদিন সমাগত, মায়া ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২১ সালেই পৃথিবী ধ্বংসের ইঙ্গিত মিলছে। যা নিয়ে এখন সরগরম আলোচনা চলছে।
মায়া ক্যালেন্ডার শুরু হয়েছে আজ থেকে ৫ হাজার ১২৫ বছর আগে। আর বলা হচ্ছিল, ক্যালেন্ডার শেষ হয় ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর। আর কনস্পিরেসি থিয়োরিস্টরা বলেছেন, সেই দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হতে পারে। কিন্তু সেদিন কিছুই হয়নি। এর প্রায় ৮ বছর পর থিয়োরিস্টরা নিজেদের হিসাবের গোলমাল খুঁজে বের করেন। তাঁরা বলছেন, ‘জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে আমরা এখন ২০১২ সালে আছি। এই পরিবর্তনের কারণে গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডারে ১১ দিন করে পরিবর্তন হয়।
আট বছরের হিসেব করলে এখনই সেই সময়। ২০১২ সালের ঠিক আট বছর হচ্ছে ২০২০ সাল। আর এই বছরই তাই পৃথিবী ধ্বংসের সম্ভাবনার কথা বলছেন তাঁরা। প্রথমে বলা হয়েছিল ২০২০ সালের ২১ জুন দিনটি পৃথিবীর শেষের সেদিন। আরও একটি দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল দিনটি। কারণ ওই একই দিনে সূর্যগ্রহণ হয়। তার সঙ্গে এটি বছরের সবচেয়ে বড়দিন। সবমিলিয়ে আশা-আশঙ্কার দোলাচলে ছিল গোটা বিশ্ব। কিন্তু সাড়ে পাঁচ মাস কেটে যাওয়ার পরেও পৃথিবী এবং পৃথিবীর বাসিন্দারা বহাল তবিয়তে রয়েছে। করোনায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাকি সব অটুট। ফলে নতুন গবেষণায় পৃথিবীর অস্তিত্ব লোপের নতুন দিন ঘোষণা করলেন গবেষকরা।
এই বছর, মানে ২০২০ সাল, একের পর এক ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। বারবার মৃত্যুমুখে পড়েছে মানব সভ্যতা। যেভাবে করোনা ভাইরাস মহামারী, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পরপর হতে থাকা ভূমিকম্প এবং শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ছে, তাতে পৃথিবী ধ্বংসের আশঙ্কা অনেকেই সত্যি বলে মনে করছেন। এবার ২০২১ সালেই পৃথিবীর শেষের সেদিন আগত বলে সুর তুলছেন মায়া ক্যালেন্ডারে বিশ্বাসী অনেকেই। এদিকে ভবিষ্যদ্বাণীর জন্যবিখ্যাত জ্যোতিষী নস্ট্রাদামুসের কথাতেও উল্লেখ আছে ২০২১ সালের কথা। ১৫৫৫ সালে তিনি মোট ৯৪২টি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, নস্ট্রাদামুস অনেক আগেই ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে এক মহামারির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালের জন্য তার ভবিষ্যদ্বাণী নাকি আরও ভয়ঙ্কর। বলা হচ্ছে, ২০২১ সালের জন্য নস্ট্রাদামুসের একটি ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, রাশিয়ার এক জৈব বিজ্ঞানী এমন এক জৈবাস্ত্র তৈরি করবেন যা ধ্বংস করে দেবে গোটা পৃথিবীর মানুষকে।
বিজ্ঞানী মহলের একাংশের দাবি, পৃথিবী ধ্বংসের আগে ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়, দুর্ভিক্ষ, মহামারি, ভূমিকম্প হবে। করোনা মহামারির পরও পৃথিবীতে বিশাল খাবারের সংকট হতে পারে বলে মনে করছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থাসহ অনেক মহল। গোটা পৃথিবীতে বর্তমানে ৫০ শতাংশ মানুষ বসবাস করেন সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। এখন যেভাবে উষ্ণায়ন হচ্ছে তাতে রোজই বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর। ফলে কোনো একটা সময় উপকূলবর্তী অঞ্চল সমুদ্রের নীচে ডুবে যাওয়াও অসম্ভব কিছু কম নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি বছরে অনেক গবেষণা করার পরে নতুন এই সময় বেছে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিষয়ও বিবেচনায় রাখা হয়েছিল। এটাকে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হিসাবে বর্ণনা করা হচ্ছে। গবেষণাটি অস্ট্রেলিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট রিস্টোরেশনের তরফে করা হয়েছে। গবেষকরা দাবি করেছে, মানব সভ্যতা আর তিন দশকের বেশি টিকে থাকবে না। এর নেপথ্যে জলবায়ু পরিবর্তনকে কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।