‘দল আমাকে গুরুত্ব দিয়েছে এবং তাতে আমি খুশি। কাজের আরো বেশি সুযোগ পাবো’, রাজ্য কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে যুক্ত হবার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) কে কৃতজ্ঞতা জানালেন বীরভূম সংসদ শতাব্দি রায় (Satabdi Roy)। আর অল্প কথায় সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। অনুব্রত বললেন, এটা রাজ্যের সিদ্ধান্ত, তিনি কিছু বলতে পারেন না।
ভোটের মুখে বহু তৃণমূল নেতা একের পর এক বেসুরো হয়ে চলেছেন। এবং তার জেরে বেশ জর্জরিত ঘাসফুল শিবির। দিন কয়েক আগে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দি রায়। এমনকি, শনিবার তার দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। শতাব্দী বিজেপিতে যোগদান নিয়েছিল জোর জল্পনা। তিনি বলেছিলেন,’ অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলা বা না বলা বিরাট ব্যাপার না। আমি এমপি, উনি মিনিস্টার। তাই দেখা করতেই পারি।” এই মন্তব্যের পরে সরাসরি শতাব্দী রায়ের মানভঞ্জনে উদ্যত হয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বীরভূমের সাংসদকে ক্যামাক স্ট্রীট অভিষেকের অফিসে নিয়ে যান। সেখানে ঘন্টা দুয়েক বৈঠকের পরে আবারো নিজের পুরনো জায়গায় ফিরে আসেন শতাব্দি রায়। শতাব্দি বলেন, “আমার সব অভিযোগ অভিষেককে জানিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে দেখে এসেছিলাম রাজনীতিতে। তাই এখনও মমতার সাথে আছি।” ওই বৈঠকের পর তিনি ক্যানসেল করে দেন দিল্লি যাবার পরিকল্পনা। শতাব্দী এরকম কাজ করলেন বলেই কি তাকে পুরস্কৃত করল দল? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে স্থান পেলেন সাংসদ শতাব্দী রায়। শীর্ষ নেতৃত্ব তাকে সহ-সভাপতি পদে নিয়োগ করেছে। তবে শতাব্দি শুধুমাত্র একা নন, সহ-সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আরো ২ জনকে। এখন প্রশ্ন রাজ্য কমিটিতে তার অন্তর্ভুক্তির পর বীরভূমের রাজনীতিতে কি পরিবর্তন ঘটতে চলেছে? তবে সেই সম্ভাবনা সম্পূর্ণ খারিজ করে দিয়েছেন শতাবদি রায় নিজে। তিনি জানিয়েছেন,” আমি কোন লোকের ব্যাপারে বলিনি। কারো নাম করিনি। এই সিস্টেমে কাজ করতে পারছিলাম না। তাই সমস্ত কথা জানিয়েছি। দলের স্টার ক্যাম্পেইনে ছিলাম, এখনো আছি। তবে এবারে দলের কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারব। দল আমাকে গুরুত্ব দিয়েছে, আমি খুশি।”
কিন্তু বিধানসভা ভোটের প্রচারে বর্ধমান এ জনসভায় অনুব্রত মণ্ডলের কি প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বললেন,” কাজ তো সব জায়গাতে করতে হবে। বীরভূম বলে আলাদা কিছু নেই। রাজ্যের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাই রাজ্যের সব জায়গায় যেতে পারবেন। রাজ্যের সিদ্ধান্ত তাই কিছু বলা যাবে না।” তবে শতাব্দীকে নতুন করে দায়িত্ব দেওয়ার ফলে কিছুটা অস্বস্তি বাড়লো অনুব্রত মণ্ডলের। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।