ফের কলকাতা হাইকোর্টে আমফান মামলা নিয়ে বড় ধাক্কা খেলো রাজ্য সরকার। আমফানের ক্ষতিপূরণ বন্টন হওয়া আর্থিক অডিট কেন্দ্রীয় সংস্থা CAG ই করবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আসলে কিছুদিন আগে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আর্জি জানানো হয়েছিল। আজকে তার শুনানিতে রাজ্য সরকারের আবদার খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি রাজ্য সরকারকে প্রত্যেকটি বিষয়ে CAG এর সাথে সহযোগিতা করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কিছুদিন আগে নথি পাওয়া যাচ্ছেনা সম্বন্ধিত প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে রাজ্য সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব CAG কে সব রিপোর্ট হাতে তুলে দিতে হবে।
গত মে মাসে বাংলার ওপর ঘূর্ণিঝড় আমফান প্রবল তান্ডব করে। ঘূর্ণিঝড় এর জেরে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের করা আবেদনের নিরিখে চলে ত্রান বন্টন। এমনকি যাদের বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তারা ২০০০০ টাকা অব্দি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কিন্তু এইখানেই শুরু হয় সমস্যা। বিরোধীদের অভিযোগ অনুযায়ী, আমফানের ত্রাণ আসলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা পায়নি। বরঞ্চ পেয়েছে তৃণমূলের নেতা ও তাদের ঘনিষ্ঠরা। ত্রান বন্টন নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে শাসক দল। পরে এই নিয়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর মুখ্যমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন যারা যারা দুর্নীতি করে টাকা পেয়েছেন তাদের অবিলম্বে সেই টাকা ফেরত দিতে হবে।
অবশেষে কলকাতা হাইকোর্ট পুরো ঘটনার গভীর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা CAG কে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তারা যাচাই করে দেখবে কারা ত্রান পেয়েছেন। তাদের একটা তালিকা তৈরী করতে হবে। সমস্ত যারা আসল ক্ষতিগ্রস্ত তারা ত্রান পেয়েছেন নাকি সেটাও তাদের জানতে হবে। এছাড়াও ত্রান বণ্টনের সময় যে দুর্নীতি হয়েছে তার জন্য কোন সরকারি আধিকারিক দায়ী তা খুঁজে বার করতে হবে। যারা দুর্নীতির জন্য দায়ী হবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের তরফে কি পদক্ষেপ নেবে তা জানিয়ে দেবে CAG। সেই নির্দেশের নিরিখে এখনো মামলা চলছে। তবে মামলায় নবান্নের ভূমিকা নিয়ে বেজায় চটেছে কলকাতা হাইকোর্ট।