বর্ণবিদ্বেষের শিকার হলেন অভিনেত্রী শ্রুতি দাস, নেটদুনিয়ায় উঠলো বিতর্কের ঝড়
সম্প্রতি অভিনেত্রী শ্রুতি দাস (shruti Das) ফেসবুকে তাঁর অভিনীত ‘দেশের মাটি’ সিরিয়াল সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন। কিন্তু পোস্টটি শেয়ার করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ট্রোল হতে হল তাঁর গায়ের রঙের জন্য। নেটিজেনদের একাংশ অভিনেত্রীকে কটূক্তি করে ‘কুৎসিত’ বলে শুধুমাত্র শ্রুতির গায়ের রঙের জন্য তাঁর রিপ্লেসমেন্ট চাইলেন। কোন সমাজে পড়ে আছি আমরা? এই বিজ্ঞানের যুগেও একটি মেয়েকে বিচার করা হয় তার গায়ের রঙ দিয়ে। মেলানিনের কারণে প্রতিটি মানুষের ত্বকের রঙ আলাদা হয়। ফেয়ারনেস ক্রিম ত্বককে ফর্সা করার থেকে ত্বকের ক্ষতি করে বেশি। এমনকি কয়েকজন নেটিজেন বলেছেন, শ্রুতিকে কাজের লোকের চরিত্রে নেওয়া উচিত। অনেকেই হয়তো জানেন না, একটি চিত্রনাট্যে কাজের লোকের চরিত্রও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাসিক বাংলা ফিল্ম ‘খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’-এ স্বয়ং মহানায়ক উত্তম কুমার (uttam kumar) কাজের লোকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যাঁকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছিল ফিল্মের কাহিনী। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নামী তারকারা অভিনয় করেছেন কাজের লোকের চরিত্রে। তবে শ্রুতি নেটিজেনদের ট্রোলের জবাব দিয়ে বলেছেন, সব হিসাব তোলা রইল।
কাটোয়া থেকে কলকাতায় পড়াশোনা করতে এসেছিলেন অভিনেত্রী শ্রুতি দাস। কিন্তু পড়াশোনার পাশাপাশি মডেলিং করার স্বপ্ন দেখতেন শ্রুতি। জি বাংলার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘ত্রিনয়নী’র মাধ্যমে শ্রুতির অভিনয়ের কেরিয়ার শুরু হয়। এই সিরিয়ালে অভিনয়ের মাধ্যমে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শ্রুতি। তবে গত বছরে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে ‘ত্রিনয়নী’র টিআরপি নেমে যায়। ফলে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী সিরিয়ালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে শ্রুতি ‘দেশের মাটি’ সিরিয়ালে গ্রামের শিক্ষিতা মেয়ে নোয়া-র ভূমিকায় অভিনয় করছেন । তাঁর বিপরীতে কিয়ানের ভূমিকায় অভিনয় করছেন দিব্যজ্যোতি দত্ত। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়েছে ‘দেশের মাটি’। একটি যৌথ পরিবার ভেঙে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর পুজো উপলক্ষ্যে স্বরূপনগরের পৈতৃক ভিটেতে সদস্যদের একত্রিত হওয়ার কাহিনী দেখানো হচ্ছে ‘দেশের মাটি’-তে।
এই মুহূর্তে শ্রুতি ‘ত্রিনয়নী’র পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার(swarnendu samaddar)-এর সাথে সম্পর্কে রয়েছেন। ‘ত্রিনয়নী’র সেট থেকে বয়সে 14 বছরের বড় স্বর্ণেন্দুর সঙ্গে শ্রুতির আলাপ যা ক্রমশ প্রেমে পরিণত হয়েছে। শ্রুতি প্রথম প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্বর্ণেন্দুকে। কিন্তু স্বর্ণেন্দু তাঁদের বয়সের ব্যবধানের কথা ভেবে পিছিয়ে গেলেও নাছোড়বান্দা শ্রুতি একসময় স্বর্ণেন্দুর মন জয় করে নেন। গত বছর পুজোর আগে শ্রুতি ও স্বর্ণেন্দু তাঁদের দুজনের পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন কোনো সমুদ্র সৈকতে। সেখান থেকে বহু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন তাঁরা। তবে দুর্গাপূজার সপ্তমীর দিন শ্রুতি চলে আসেন তাঁদের কাটোয়ার বাড়িতে। কিন্তু স্বর্ণেন্দু তাঁর সাথে কাটোয়া যেতে চাননি। তবে এই মুহূর্তে স্বর্ণেন্দু ও শ্রুতির বিয়ের ব্যাপারে দুই পরিবার চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে জানা গেছে।