‘উগ্র’, ‘ধর্মান্ধ’, ‘গদ্দার’- ভিক্টোরিয়ায় নেতাজী জন্ম জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যারা ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান তুলেছিলেন তাদের এই তিন শব্দেই তীব্র ভাবে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো। আগের শনিবারের পর আজ, সোমবার তথা আজ প্রথম কোনও জনসভায় বক্তব্য রাখলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এইদিন হুগলির পুরশুড়ার স্লোগান-বিতর্ক নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ‘পরাক্রম দিবস’ এর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানে ভাষণ রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণার সাথে সাথে দর্শক আসন থেকে সমস্বরে ওঠে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান। সাথে সাথে ক্ষুব্ধ হয়ে বক্তব্য না রেখে প্রতিবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করিয়ে দেন যে এটি একটি সরকারি অনুষ্ঠান, কোনও রাজনৈতিক দলের সভা নয়।
সেদিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এইদিন পুরশুড়ায় জনসভার আগে পর্যন্ত প্রকাশ্যে আর কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু এইদিন এই ঘটনায় রীতিমতো গেরুয়া শিবিরকে এক হাত নেন মমতা, এইদিন তিনি জনতার উদ্দেশ্যে প্রথমেই একটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন,”আপনারা কি আমাকে বাড়িতে খেতে ডেকে বলবেন, তোমাকে এক থাপ্পড় মারব বেরিয়ে যাও বাড়ি দিয়ে? কখনও বলবেন? এটা আমাদের রীতি সৌজন্যতা ভদ্রতা নয়।”
স্লোগান এবং বিতর্কের প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন,”নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আমাদের সবার নেতা। সারা দেশের এবং সারা বিশ্বের নেতা নেতাজি। তার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমি গেলাম। আর এত বড় সাহস যে কয়েকটা উগ্র ধর্মান্ধ গদ্দার আমাকে টিজ করে। তাও প্রধানমন্ত্রীর সামনে।” তার বক্তব্য,”তোমরা যদি নেতাজি নেতাজি করতে তবে আমি তোমাদের স্যালুট জানাতাম।”
তার বক্তব্য,”বাংলাকে অপমান করেছে তারা। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে অপমান করা হয়েছে। আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমান করেছেন তারা। ওদের নেতার মতে কবিগুরুর জন্মস্থান শান্তিনিকেতন। আসলে তা জোড়াসাঁকো। শান্তিনিকেতনে তিনি বিশ্বভারতী তৈরি করেছিলেন। বিজেপি আগে ভেঙেছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি।”
অন্যদিকে হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তার বক্তব্য,”ওরা আমায় চেনে না। আমায় যদি কোনও মা ঘরে বাসন মেজে দিতে বলে আমি মেজে দেব। আমি ঘরের কাজ করতে ভালোবাসি। কিন্তু কেউ বন্দুক দেখায় তা হলে আমিও সিন্দুকে বন্দুক দেখাব।”