গভীর বনাঞ্চলের একটি অংশ থেকে ঠিকরে বেরোচ্ছে সোনার (Gold) আলোর ছটা, ভূপৃষ্ঠের ৩৭০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে করতে সেই তাক লাগানো ছবি তুলেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। এমন অবাক করা ছবি নিজেদের ‘আর্থ অবজারভেটরি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করল নাসা (NASA)। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ আমেরিকার (America) পেরুতে (Peru) আমাজনের বড় বড় নদীগুলিতে বয়ে যাচ্ছে তরল সোনার স্রোত, জলের ধারার মতো।
মহাকাশ থেকে ওই অঞ্চলের যে ছবি ধরা পড়েছে, সেই জায়গাটি মূলত সুউচ্চ পাহাড়ি এলাকা। সেখানে রয়েছে প্রচুর সোনার খনি। সেই খনিগুলি থেকে চোরাকারবারিরা লুকিয়ে চুরিয়ে বহু দিন ধরেই সোনা তুলে চলেছে। চোরাগোপ্তা সোনা তুলতে গিয়ে খনিগুলিতে জল ঢুকে পড়ছে লাগোয়া নদীগুলি থেকে। মিশে যাচ্ছে নদীর পলিমাটি। সেই কাদার জলের স্রোতে মিশে থাকছে প্রচুর স্বর্ণকণিকা।আর তাতেই সূর্যের আলো পরার ফলে মহাকাশ স্টেশন থেকে দেখে মনে হচ্ছে তরল সোনার স্রোত বয়ে যাচ্ছে।এমনটাই জানিয়েছে নাসা। পেরুর মাদ্রে দ্য দিয়স প্রদেশের ওই এলাকায় রয়েছে প্রচুর সোনার খনি। সেই খনিগুলি থেকে চোরাগোপ্তা সোনা তোলার কাজে জড়িত অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। নদীর জলে থিতিয়ে পড়া জিনিসপত্রের মধ্যে খুঁজে খুঁজে স্বর্ণকণিকাগুলিকে আলাদা করতে গিয়ে পারদ ব্যবহার করছেন সোনা-চক্রীরা। দূর থেকে দেখতে সুন্দর লাগলেও নদীর জলগুলি বিষিয়ে গিয়ে স্থানীয় মানুষের পক্ষে হয়ে উঠছে রীতিমতো বিপজ্জনক করে তুলছে গোটা নদীকেই।
নাসার আর্থ অবজারভেটরির তরফে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাস্টিন উইলকিনসন লিখেছেন, ‘‘ওই জলের উপরে পড়ে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হওয়ার জন্যই মহাকাশ স্টেশন থেকে তোলা ছবিতে মনে হচ্ছে যেন তরল সোনার স্রোত বয়ে যাচ্ছে পেরুর আমাজন বনাঞ্চলের ওই অংশের নদীগুলিতে।’’ তবে কীভাবে ওই নদীকে পরিষ্কার করে পরিশ্রুত করা যায় ওই নদীর জলকে এবং এই চোরা কারবারির ব্যবসাও কিভাবে বন্ধ করা যায় সেই নিয়ে এখন পরিকল্পনা চলছে।