গতবছর থেকে করোনা ভাইরাস প্যানডেমিকের জেরে একপ্রকার স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল বিশ্ববাসীর জীবনযাত্রা। সেই কারণে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বিদেশ সফর প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিদেশ সফরের কথা বললেই প্রথমেই নরেন্দ্র মোদির নাম চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আসলে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মোদির ঘন ঘন বিদেশ যাত্রা বারংবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। মোদির বিদেশসফর এবং বিমানযাত্রা সংক্রান্ত খরচের অঙ্ক জেনে অনেকেই আঁতকে উঠছে। কিন্তু গত ১৫ মাস ধরে সমালোচকরা মোদির বিদেশ যাত্রা নিয়ে একটি শব্দ খরচ করতে পারেনি। কারণ আগের বছর থেকে কোন বিদেশ সফরে যায়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অবশ্য যায়নি বললে বলাটা ভুল হবে। করোনা প্যানডেমিকের প্রভাবে যাওয়ার সুযোগ পাননি তিনি।
তবে দীর্ঘ ১৫ মাস পর ফের বিদেশ সফর শুরু করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বরাবরই যে পরশি দেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় তা বলার অবকাশ রাখে না। এবার বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন তিনি। তাকে স্বাগত জানাতে সেজে উঠেছে বাংলাদেশ। রাস্তায় রাস্তায় শহরজুড়ে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির হাসিমুখের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। ব্যানার, ফেস্টুনের ছড়াছড়ি পুরো দেশ জুড়ে। যেন নরেন্দ্র মোদিকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য তারা প্রস্তুত। মোদি ২ দিনের জন্য বাংলাদেশ সফরে যাবেন বলে জানা গিয়েছে। অবশ্য তার এই দুদিনের সফর কর্মসূচিতে পুরোপুরি ঠাসা।
আজ অর্থাৎ শুক্রবার বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। এদিন সকালে ঢাকায় গিয়ে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন মোদি। সেখানে তার বক্তৃতা দেওয়ার কথা আছে। এরপর আগামীকাল শনিবার সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ঈশ্বরীপুরে যশোরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেবেন। তারপর সেখান থেকে তিনি মতুয়া প্রধানের স্থান ওড়াকান্দিতে যাবেন। সেখানে মতুয়া মন্দিরে পূজা দেবেন তিনি। আর মোদির এই মতুয়াপ্রীতি দেখে বঙ্গ রাজনৈতিক বিশ্লেষকের একাংশ মনে করেছেন যে প্রধানমন্ত্রীর এই বাংলাদেশ সফর সম্পূর্ণভাবে কূটনৈতিক উদ্দেশ্যে।
আসলে একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচন দোরগোড়ায় এসে উপস্থিত হয়েছে। রাজ্যে বিজেপি তাদের সর্বশক্তি দিয়ে ভোট প্রচারের উদ্দেশ্যে মাঠে নেমে পড়েছে। গেরুয়া শিবির মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাইতো বারবার শান্তনু ঠাকুরের সাহায্যে মতুয়াদের প্রিয় হয়ে উঠতে চাইছে বিজেপি। তবে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশকে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের প্রতি কি বার্তা দেয় তা বাংলার মতুয়াদের মোদিপ্রীতি বাড়াতে যে সাহায্য করবে, তার বলার অবকাশ রাখে না। তাই তো গোটা দুই দিনের সফরে গোটা একদিন মতুয়াদের জন্য তুলে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে শেখ হাসিনার সাথে আলোচনা করবেন যে কিভাবে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো যায়। মূলত ব্যবসা ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।