একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচন জোরকদমে চলছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে দুই দফা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বাকি রয়েছে আর ৬ দফার নির্বাচন। এখন রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা তাদের নিজ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে ঝড় তুলেছে। তবে এতদিন ধরে বঙ্গ রাজনীতিতে একটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল যে তারকা প্রার্থী দেবশ্রী রায়কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন এবার এর বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট দেয়নি? এই প্রশ্ন নিয়ে অনেক জলঘোলা হলেও কেউ এর উত্তর দেয়নি। তবে আজ অর্থাৎ শনিবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন যে তিনি কেন দেবশ্রী রায়কে এবারে প্রার্থীপদ দেননি।
একুশে নির্বাচনের মাঝেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ রায়দিঘিতে একটি ভোট প্রচারের জনসভাতে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, “দেবশ্রী রায়কে নিয়ে বরাবর মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সাধারণ মানুষ যখন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তখন নিশ্চয়ই কাজ করে না। আমার কানে সব খবর এসেছিল। তাই তাকে বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূল প্রার্থীপদ টিকিট দেওয়া হয়নি।” আসলে দেবশ্রী রায় বরাবর বিতর্কিত তৃণমূল নেত্রী ছিলেন। বিজেপির সাথে তার সম্পর্ক যে বহু পুরনো তা জানার বাকি নেই কারোর। এছাড়াও তিনি সম্প্রতি বারংবার ধমক দিয়ে দলবদল প্রসঙ্গ তুলে নিয়েছিলেন।
দেবশ্রী রায় প্রথম ২০১১ সালে তৃণমূলের তারকা বিধায়ক হিসেবে দলে যোগদান করেন। প্রথম তিনি বাম নেতা ক্রান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে হারিয়ে এলাকার বিধায়ক হয়ে ওঠেন। কিন্তু এলাকাবাসী বারংবার অভিযোগ তোলে যে তাদের সাথে দেবশ্রী রায়ের যোগাযোগ ঈশ্বর দেখার মত। তিনি সাধারণ মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে থাকেন। তার বিরুদ্ধে হাজার অভিযোগ থাকার পরও ২০১৬ সালে তিনি সেট তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী হন। দলের অন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে যে এই সময় শোভন চট্টোপাধ্যায় এর সাথে তার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাকে দল থেকে বাদ দেয়া যায়নি। তারপর ২০১৬ সালে নির্বাচনে জেতার পরও এলাকাবাসীর হিত উদ্দেশ্যে তাকে যেমন কোন কাজ করতে দেখা যায়নি। আর তারপরই একুশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেবশ্রী রায় কে নির্বাচন লড়ার টিকিট দেয়নি।