যীশু সেনগুপ্ত ( Jisshu u sengupta)- র কেরিয়ারগ্রাফ ক্রমশ এগিয়ে চলেছে। অপরদিকে নীলাঞ্জনা (Nilanjana sengupta)-র সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য জীবনও যথেষ্ট সুখী। নীলাঞ্জনা ও যীশুর প্রযোজনা সংস্থা ‘ব্লু ওয়াটার পিকচার্স’-এর সমস্ত দায়িত্ব সামলান নীলাঞ্জনা। অপরদিকে রয়েছে যীশুর দুই মেয়ে সারা (sara sengupta) ও জারা (Zara sengupta)। সারা ইতিমধ্যেই সৃজিত মুখার্জি (srijit Mukherjee) পরিচালিত ফিল্ম ‘উমা’-র মাধ্যমে টলিউডে শিশুশিল্পী হিসাবে ডেবিউ করেছে। কিন্তু এই সব কিছুর পরেও যীশুর ঘরে আসতে চলেছে যমজ সন্তান। তবে এবার নীলাঞ্জনা নয়। সোলাঙ্কি রায় (solanki Roy) নেবেন যীশুর যমজ সন্তানের দায়িত্ব।
কিন্তু হঠাৎ সোলাঙ্কি কেন প্রবেশ করছেন যীশুর সংসারে? প্রকৃতপক্ষে, শিবপ্রসাদ (shibaprasad)-নন্দিতা (Nandita) জুটির আপকামিং ফিল্ম ‘বাবা, বেবি ও ……..’-তে ‘সিঙ্গল ফাদার’-এর চরিত্রে অভিনয় করছেন যীশু ও সোলাঙ্কি। ‘উইন্ডোজ’ প্রযোজিত এই ফিল্মের ফার্স্ট লুক প্রকাশ্যে এসেছিল গত ডিসেম্বরে। যীশু নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছিলেন ‘বাবা, বেবি ও….’ -এর ফার্স্ট লুক। তবে ফিল্মের শুটিং শুরু হয়েছিল 21 শে মার্চ থেকে। আপাতত জোকায় শুটিং চললেও ফিল্মের বেশ কিছুটা অংশের শুটিং হয়েছে শান্তিনিকেতনে। এই ফিল্মের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিনেত্রী হিসাবে পা রাখলেন সোলাঙ্কি। ‘উইন্ডোজ’-এর সঙ্গেও এই প্রথম কাজ করলেন সোলাঙ্কি। করোনা অতিমারীর কারণে ফিল্মের শুটিং দ্রুত আড়াই সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হয়েছে প্রযোজনা সংস্থা ‘উইন্ডোজ’-কে। কিন্তু শুটিং করতে করতে পুরো ইউনিট পরিণত হয় একটি পরিবারে। তাই শুটিং শেষ হলেও একরাশ মনখারাপ থেকে যায় সকলের মনে। সোলাঙ্কিও তার ব্যতিক্রম নন।
‘বাবা, বেবি ও ……’ ফিল্মের চিত্রনাট্য আবর্তিত হয়েছে একজন পুরুষকে ঘিরে যে বিয়ে না করে উপভোগ করতে চায় পিতৃত্ব, শুনতে চায় ‘বাবা’ ডাক। একইসঙ্গে এই কাহিনী মেঘ ও বৃষ্টির। যীশু অভিনীত চরিত্রের নাম মেঘ। বছর চল্লিশের মেঘ বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিলেও সারোগেসির মাধ্যমে যমজ সন্তানের বাবা হয়েছে। সোলাঙ্কি অভিনীত চরিত্রটির নাম বৃষ্টি যে কিনা মেঘের সন্তান আছে শুনে ভাবে মেঘ বিবাহিত। বৃষ্টি বাচ্চা পছন্দ করে না। অথচ একসময় এই বৃষ্টি ভালোবেসে ফেলে মেঘকে। তথাকথিত স্টিরিওটাইপ বারবার ভেঙেছেন শিবপ্রসাদ-নন্দিতা। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মেয়েদের মা হতে চাওয়ার ট্র্যাডিশন ভেঙে বৃষ্টির চরিত্রটি তৈরী করেছেন তাঁরা। কারণ সমাজ মেয়েদের শিখিয়েছে মা না হলে জীবন বৃথা। কিন্তু এমন কি মহাভারত অশুদ্ধ হবে যদি একটি মেয়ে মা না হতে চায়? তার যদি বাচ্চা পছন্দ না হয়? তার যদি রাত জেগে ডায়পার ও বার্প ক্লথের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছে না করে? ‘বাবা, বেবি ও…….’-এর চিত্রনাট্য লিখেছেন শিবপ্রসাদের স্ত্রী ও নামী ‘পেজ থ্রি’ সাংবাদিক জিনিয়া সেন (Jinia sen)। সংলাপ লিখেছেন সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায় (samragnee Banerjee)। ফিল্মের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত সুরকার চমক হাসান (chamak hassan)। শিবপ্রসাদ-নন্দিতা জুটির সঙ্গে চমক হাসানের প্রথম কাজ হতে চলেছে এটি। ‘বাবা, বেবি ও…..’ ফিল্মের পরিচালক হলেন ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ খ্যাত অরিত্র মুখোপাধ্যায় (Aritra mukherjee)।
তবে শুটিংয়ের মূল তারকা হল চার খুদে যাদের মধ্যে দুজনের বয়স সাত-আট মাস, অপর দুজনের বয়স তিন-চার মাস। সোলাঙ্কি জানালেন, যীশুকে দেখলেই কাঁদতে শুরু করত তিন-চার মাসের খুদেরা। তবে সোলাঙ্কিকে দেখলেই সাত-আট মাসের একরত্তিদের নিজস্ব ভাষায় অনেক বক্তব্য জানানোর থাকত। হয়ত যীশুর সম্মন্ধে অভিযোগ করত। শুটিং অথবা মা-বাবার জোর করে খাবার খাওয়ানো নিয়ে অভিযোগও হতে পারে। কিন্তু সোলাঙ্কি এখনও অবধি তাদের বক্তব্যের সারমর্ম উদ্ধার করে উঠতে পারেননি। তবে তারা চারজনেই সুপারস্টারের মতো ‘ওয়ান শট ওকে’ করে দিত বলে জানিয়েছেন সোলাঙ্কি। তবে সুপারস্টাররা আবার মাঝে মাঝেই অবাক হয়ে যেত সোলাঙ্কির সাজগোজ দেখে। সোলাঙ্কি জানিয়েছেন, করোনা অতিমারীর মধ্যেও ‘উইন্ডোজ’ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাই যখন-তখন বিনা কারণে শিশুদের কাছে কারও যাওয়া বারণ ছিল। তবে প্রথম ফিল্মেই নিজের বিপরীতে যীশুকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন সোলাঙ্কি। ইন্ডাস্ট্রিতে যীশু যথেষ্ট সিনিয়র এবং অভিজ্ঞ অভিনেতা। কিন্তু যীশু তাঁর সুন্দর ও সাবলীল ব্যবহারের মাধ্যমে পরিস্থিতি সহজ করে দিয়েছিলেন। শিশুদের সঙ্গে ফিল্মে কাজ করলেও সোলাঙ্কি নিজে এখুনি মা হতে চান না। কারণ তাঁর মনে হয় শিশুদের বুঝতে তাঁর এখনও একটু সময় লাগবে।