আগামী ৫ মে থেকে রাজ্যের সকলকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২মে রাজ্যে নির্বাচনী ফল ঘোষণা এবং তারপরে ১৮ বছরের উর্ধ্বে সকলকে বিনা পয়সায় করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়ে দিলেন, কলকাতা এবং শহরাঞ্চলে অতিমারির প্রকোপ অত্যন্ত বেশি হয়েছে এবং সেখান থেকে প্রথম টিকাকরণ শুরু হবে। তারপরে অন্যান্য জেলাগুলিতে টিকাকরণ এর কাজ শুরু করবে রাজ্য সরকার। দক্ষিণ দিনাজপুরে নির্বাচনী জনসভা করতে গিয়ে ছিলেন বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে বিনামূল্যে সার্বিক টিকাকরণের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “নির্বাচনী ফল ঘোষণার পর আগামী ৫ মে থেকে নতুন করে টিকাকরণ শুরু করা হবে। ১৮ বছরের উর্ধ্বে সকলকে টিকা দেওয়া হবে। এর জন্য সবাইকে আগে নাম নথিভুক্ত করতে হবে নিজের। সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় সরকার প্রতিষেধক কিনে দেবে।” যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিকাকরণ নিয়ে বারংবার কেন্দ্রের ঢিলেমি কে সামনে এনেছেন। এছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ এনেছেন, দেশে যে হারে সংক্রমণ এবং মৃত্যু বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই নিরিখে কেন্দ্রের সমস্ত ঢিলেমি কাজ করছে।
মমতা বললেন, “কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের কিছু দেয় না। আবার করোনা ভাইরাসের আক্রমণ শুরু হয়েছে। আগেরবার প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গিয়েছেন। আমরা সমস্ত কিছু সামনে নিয়ে ছিলাম। এবছর করোনাভাইরাসের প্রভাব আর একবার শুরু হওয়ার কথা ছিল। যদি ছয় মাস আগে থেকে প্রতিশোধক দেওয়া হতো তাহলে এরকমটা হতো না।” প্রতিষেধক কিনতে চাইলেও এতদিন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার তা করতে দেয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন তিনি এই কথা।
মমতা বলেছেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জানিয়েছিলাম, প্রতিষেধক দাও।আমি টাকা দিয়ে কিনে সকলকে দেবো কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই ভ্যাকসিন দিলেন না। এখন রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে জনগণের উপর দোষ চাপিয়ে জোগাড় করে নিতে বলছে। কোত্থেকে জোগাড় করবো? দেশের প্রতিষেধক তো সমস্ত বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছো। দেশে কোনো প্রতিষেধক নেই।” এছাড়াও কেন্দ্র এবং রাজ্যে আলাদা আলাদা প্রতিষেধক এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই নিয়ে কেন্দ্রীয় একহাত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “অন্য সময় হলে এক দেশ, একদল এবং এক নেতার কথা বলবে। আর যখন টিকাকরণের সময় হবে তখন দাম আলাদা আলাদা? কেন হবে? কেন্দ্র কিনলে ১৫০, রাজ্য কিনলে ৪০০ আর বেসরকারী হাসপাতাল কিনলে ৬০০, কি হচ্ছে এটা? প্রতিষেধক একটা জরুরী পরিষেবা। এটা আপনার ব্যবসা করার জায়গা নয়। এতো জায়গায় এতো টাকা গচ্ছিত রয়েছে, যদি সেই টাকা দিয়ে প্রতিষেধক দেওয়া হতো তাহলে করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি এত খারাপ হত না।”