দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের থাবা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে আরো বেশি করে। এর ফলে বর্তমানে তরল অক্সিজেন চাহিদা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। করোনা ভাইরাসের আক্রমণ যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যায় তখন লিকুইড অক্সিজেন ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না হাতে। সেই পরিস্থিতিতে যদি লিকুইড অক্সিজেনের সরবরাহ ভালো না হয় তাহলে কিন্তু রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়না।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে লিকুইড অক্সিজেন বাড়ন্ত। তাই এবারে লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখতে বড় ঘোষণা করলো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তর। জানানো হয়েছে, এবার থেকে শিল্পক্ষেত্রে আর কোনভাবেই লিকুইড অক্সিজেন ব্যবহার করা যাবে না। গত ২২ এপ্রিল তারিখে এরকম একটি নির্দেশিকা নিয়ে এসেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেখানে জানানো হয়েছিল ওষুধ শিল্প, তেল, স্টিল, পরমাণু চুল্লি এর মত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ক্ষেত্রে তরল অক্সিজেন ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু অন্যান্য সেক্টরে তরল অক্সিজেন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তারপর থেকে করোনাভাইরাস এর প্রভাব ধীরে ধীরে আরও বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে অক্সিজেনের সংকট চলছে সারা দেশে। তাই এবারে, শিল্পক্ষেত্রে অক্সিজেন ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পেলেও, শিল্প ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তের ফলে উৎপাদনে অনেক সমস্যা আসতে পারে।
ফলে দাম বৃদ্ধি হতে পারে বিভিন্ন জিনিসের। এই তালিকায় বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস রয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষের প্রাণ বাঁচানো আগে প্রয়োজন, তাই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্ত বলবৎ করা হলো। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, প্রত্যেকটি অক্সিজেন উৎপাদনকারী সংস্থা আরো বেশি করে অক্সিজেন উৎপাদন করবে এবং সেই অক্সিজেন ব্যবহার হবে সম্পূর্ণরূপে চিকিৎসা ক্ষেত্রে। বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, এই সিদ্ধান্তের ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে দেশের অক্সিজেনের ঘাটতি বেশ কিছুটা কমতে পারে।
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে অক্সিজেন সরবরাহ যাতে সহজে সেজন্য অক্সিজেন এক্সপ্রেস ট্রেন চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এছাড়াও শনিবার অক্সিজেন তৈরির উপকরণ এবং সরবরাহ সরঞ্জামের আমদানিতে শুল্ক এবং স্বাস্থ্য সেস সম্পূর্ণরূপে সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ব্যবহার করা হচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা। রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষণা করেছেন, দেশের প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি করে মাইক্রো অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হবে। এবং এর অর্থ সরাসরি পাঠানো হবে পিএম কেয়ার তহবিল থেকে। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে ওয়াকিবহাল মহল।