মোদি সরকারের গাফিলতিতেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, দাবি ল্যানসেটের
ভারতের এমন ভয়ঙ্কর অবস্থার জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদি এবং মোদি সরকার বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা বিষয়ক পত্রিকা "ল্যানসেট"
করোনা সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউতে নাজেহাল গোটা ভারত। প্রতিদিন সংক্রমণের হার ও মৃত্যুহারের গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। একাধিক রাজ্যে ২৪ ঘন্টা গণচিতা জ্বলছে। ভারতের এমন ভয়ঙ্কর অবস্থার জন্য দায়ী মোদি এবং মোদি সরকার বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা বিষয়ক পত্রিকা “ল্যানসেট”। তাদের সম্পাদকীয় কলমে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে তারা বলেছে, মোদি সরকার যেমন কোভিড পরিস্থিতিকে খাটো করে দেখেছে, “তাই ভারতে দ্বিতীয় ঢেউ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ভারতের এমন অবস্থার জন্য ভারত নিজেই দায়ী।”
এছাড়াও ল্যানসেটে সম্পাদকীয় কথায় বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে ভারত যে সাফল্য পেয়েছিল তাতে তাদের আত্মতুষ্টি এসে যায়। এপ্রিল মাসের শুরুতে যখন দ্বিতীয় স্ট্রেন প্রচুর পরিমাণে সংক্রামিত হচ্ছিল তখন মোদি সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ব্যবস্থা তো দূরের কথা, এমনকি কোভিড টাস্কফোর্সের সাথে একটি বৈঠকও করেননি। বারংবার সকল জায়গা থেকে ভারতকে সাবধান করা হলেও মোদি সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। এই দ্বিতীয় ঢেউ “সুপার স্প্রেডার” হতে পারে এই আশঙ্কা জানানো হলেও মোদি সরকার তাতে কর্ণপাত না করে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। আর তার ফল আজকের ভারতের করোনা পরিস্থিতি।
অন্যদিকে ‘দ্য ইন্সটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন’ জানিয়েছে যে আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভারতে করোনা মৃতের সংখ্যা ১০ লাখের গণ্ডি স্পর্শ করতে পারে। বর্তমানে ইতিমধ্যেই ভারতজুড়ে দৈনিক ৪ লাখের কাছাকাছি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন ও মৃত্যু হচ্ছে ৪০০০ এর বেশি মানুষের। এই পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকি এখনো অব্দি নরেন্দ্র মোদি নবনির্বাচিত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এ কে স্ট্যালিনের সাথে বৈঠক করলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে কোনো বৈঠক করেন নি। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের থেকে কোভিড পরিস্থিতি সম্বন্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করে মোদিকে চিঠি লিখলে তিনি তার কোনো সদুত্তর করেননি। দেশের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝে নরেন্দ্র মোদির কাছে রাজনৈতিক অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক।