ভারতীয় ক্রিকেটে যেভাবে শেষের দিকে ব্যাট করতে নেমে মহেন্দ্র সিং ধোনি পুরো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন, ঠিক তেমনি এবারে করোনাকালে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গেম চেঞ্জার হিসাবে সামনে আসছে ভারতের ডিআরডিও দ্বারা সার্টিফায়েড ওষুধ 2DG বা ২ -ডি অক্সি – ডি গ্লুকোজ। সাধারণ ডি – গ্লুকোজের (C6H12O6) একটি অনুর -OH (হাইড্রক্সিল) আয়নটিকে একটি -H (হাইড্রোজেন) এর মাধ্যমে প্রতিস্থাপিত করে তৈরি হয়েছে এই ঔষধটি। সাদা বাংলায় বলতে গেলে, ওষুধটি ভাইরাস আক্রান্ত কোষটিকে অ্যাটাক করে এবং ভাইরাসটির বংশবিস্তারে বাধা দেয়। ফলে ভাইরাসটি আর বেশি ছড়াতে পারে না দেহে। ডক্টর রেড্ডি ল্যাবরেটরিজের বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ওষুধটি করোনাভাইরাস চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটা বড় পদক্ষেপ হিসেবে সামনে আসবে।
এই ওষুধটি হতে চলেছে করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটা গেম চেঞ্জার। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যেই এই ওষুধটি সার্টিফাই করে দিয়েছে ডিআরডিও। আগামী সপ্তাহে এই ওষুধের ১০,০০০ ডোজের প্রথম ব্যাচ রিলিজ করা হবে। এটি দেখতে আদতে একেবারে গ্লুকোজ পাউডারের মত। জলে গুলে আপনাকে এ মিশ্রণটি খেতে হবে তাহলেই কাজ হয়ে যাবে। তাছাড়া এই ওষুধটির মূল্য জনগণের আয়ত্তের মধ্যেই থাকবে। সংরক্ষণ করাও খুব একটা হ্যাপার কাজ নয়।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাস এর প্রতি স্ট্রেনের সঙ্গে এই 2DG লড়াই করতে সক্ষম। এই ওষুধটি ভাইরাসের প্রোটিনের পরিবর্তে মানব কোষের প্রোটিনগুলি পরিবর্তিত করে ফেলে, ফলে ভাইরাস আর বংশ বিস্তার ঘটাতে পারে না। এই ওষুধটি যে কোন স্ট্রেনের ভাইরাসকে একইভাবে অ্যাটাক করতে পারে। তৃতীয় পর্বে ট্রায়ালের পরে দেখা গেছে এই ওষুধটি বেশকিছু করোনার স্ট্রেনের সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম।
অত্যন্ত গুরুতর করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস অত্যন্ত কার্যকরী হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের উৎসাহে এই নতুন ওষুধ কি তৈরি করার কাজ শুরু করেছিল ডক্টর রেড্ডিজ ল্যাবরেটরি। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে এই ওষুধটি কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। তারপরে দ্বিতীয় ট্রায়াল’ এবং তৃতীয় ট্রায়াল করার পরে যখন সম্পূর্ণ সাফল্য মেলে, তারপরেই এই ওষুধ বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত নেয় ডিআরডিও। আগামী সপ্তাহে প্রথম ডোজ আসার পরে দেখতে হবে এই ওষুধটি মানুষকে কতটা বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম।