জামিন না জেল? কলকাতা হাইকোর্টে আজই ভাগ্য নির্ধারণ ফিরহাদ-মদন-শোভন-সুব্রতের
গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট বুধবার অব্দি চার নেতাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল
গত সোমবার সকাল থেকে খবরের শিরোনামে রয়েছে নারদ কান্ড। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল সোমবার সকালে দুই হেভিওয়েট নেতা ও প্রাক্তন দুই মন্ত্রীকে সিবিআই গোয়েন্দাদের গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে। ফিল্মি কায়দায় সাতসকালে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে তাদের গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তারপর থেকে এই মামলায় অনেক উত্থানপতনের পর শেষ পর্যন্ত আজ অর্থাৎ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে চার নেতার ভাগ্য নির্ধারণ হবে। আজকে হাইকোর্টে জামিন স্থগিতের পুনর্বিবেচনা ও মামলা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে শুনানি হবে। আজই নির্ধারিত হয়ে যাবে নেতাদের ভাগ্যে জামিন না জেল আছে।
বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। গতকাল দুপুর থেকে তার জ্বর এলেও জেল কর্তৃপক্ষ তাকে প্যারাসিটেমল দিচ্ছে। তিনি হাসপাতালে যেতে নারাজ এবং গতকাল থেকেই প্রাতরাশ করেননি। অন্যদিকে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আপাতত তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায় সোমবার দিন রাতেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে এসএসকেএম উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ ও ১০৫ নম্বর রুমে ভর্তি হন। অন্যদিকে সুব্রত মুখোপাধ্যায় সোমবার মধ্যরাতে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েও আবার রাতে জেলে ফিরে আসেন। কিন্তু গতকাল সকালে তার শারীরিক অস্বস্তি বাড়লে কলকাতা পুলিশ তাকে দ্রুত এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
গত সোমবার বিকেলের দিকে প্রথমে ৪ মন্ত্রীর জামিনের রায় দিয়েছিল নিম্ন আদালত। কিন্তু রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ কলকাতা হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে। কলকাতা হাইকোর্ট বুধবার পর্যন্ত নেতাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তারপর গতকাল মঙ্গলবার সেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীরা। অভিযুক্তদের হয়ে প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হন আইনজীবী তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি ও সিদ্ধার্থ লুথরা। পরে প্রধান বিচারপতির অনুমতিতে লিখিত পিটিশন দায়ের করা হয়।
এরপর আজ ভাগ্য নির্ধারণের দিন। সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনা তৃণমূল শিবিরে। গোটা রাজ্য তাকিয়ে আছে দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী ও দুই প্রাক্তন মন্ত্রীর জামিনে মুক্তি ঘিরে হাইকোর্টের শুনানির দিকে। একদিকে তৃণমূলের দাবি যে দুই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর অর্থাৎ পঞ্চায়েত ও পরিবহন এবং অন্যদিকে কলকাতা পুরসভা জেলে আটক দুই মন্ত্রীর অধীনে। এই করোনা পরিস্থিতিতে তারা জেলে থাকলে সরকারি কাজে অসম্ভব ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে সিবিআই কর্তারা প্রাণপণ চেষ্টা করছে যাতে এই নেতাদের আজ জামিন না হয়। তাই তারা এই নারদ কান্ড মামলাকে অন্য রাজ্যে সরিয়ে নিতে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাই গত সোমবার নিজাম প্যালেস এর বাইরে মানুষের বিক্ষোভের ভিডিও কেন্দ্রকে পাঠিয়ে তারা এই মামলা রোজভ্যালির মামলার মতো অন্যত্র জায়গায় নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছে। তবে আজ কলকাতা হাইকোর্টে মামলার সময় আগের সোমবারের মত বিক্ষোভের যাতে না পুনরাবৃত্তি ঘটে তার দিকে খেয়াল রাখার বার্তা দিয়েছেন মদন মিত্রের স্ত্রী ও ফিরহাদ হাকিমের মেয়ে।