শুনানি শেষ কলকাতা হাইকোর্টে, জেল না জামিন, নারদ মামলায় কি সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা হাইকোর্ট
আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টোয় ফের শুনানি হবে
জেল বা জামিনের সিদ্ধান্ত দেখার জন্য সকাল থেকেই মুখিয়ে ছিল বঙ্গবাসী। তবে দিনের শেষে কলকাতা হাইকোর্ট জামিন বা শাস্তি কিছুর কথাই ঘোষণা করলো না। এই মামলায় ফের শুনানি হবে আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টোয়। এছাড়াও ২ ঘন্টার সওয়াল জবাবে নারদ মামলায় গ্রেফতার চার নেতা মন্ত্রীর জামিন বা মামলা স্থানান্তর করারও কোনো রায় দেওয়া হইনি। আজ বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে লড়াইয়ের মাঠে কোন পক্ষই একফোঁটা মাথানত করতে রাজি হয়নি। জনপ্রিয় আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙঘভি ও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার মধ্যে করা সওয়াল-জবাব চলেছিল দীর্ঘক্ষন। মামলা স্থানান্তর বিষয়ে অভিষেক মনু সিঙঘভি স্পষ্ট বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন প্রতিবাদ করেছিলেন গান্ধীবাদী ধরনের। এছাড়া নিজাম প্যালেসের বাইরে জনতার রোষ স্বাভাবিক। জনপ্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটলে তা যেকোন রাজ্যে হয়ে থাকে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন এর আগে এমন ঘটনা সঞ্জয় দত্ত বা সালমান খানের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছিল।”
তবে বিচারপতি এখানে প্রশ্ন তোলেন যে মুখ্যমন্ত্রী সহকর্মী হলেও তিনি অল্প সময়ের জন্য সিবিআই দপ্তরে ছিলেন এমন না। তিনি প্রায় ৫-৬ ঘন্টা নিজাম প্যালেসে ছিলেন। কেন শুনানি চলাকালীন নিম্ন আদালতের রাজ্যের আইন মন্ত্রী থাকবে? তার উত্তরে মনু সিঙঘভি স্পষ্ট বলেছেন, “আইনমন্ত্রী নিম্ন আদালতে গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু তিনি শুধুমাত্র মন্ত্রী নয়। তিনি একজন বিধায়কও বটে। তাহলে এই ঘটনাকে কেন অস্বাভাবিক দেখব?” এছাড়াও তিনি বলেছেন, “আমি ভিডিও ফুটেজ এ দেখাতে পারি বারংবার মন্ত্রীরা নিজাম প্যালেস এর বাইরের মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন এবং সকলকে নিরব থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন। সিবিআই গোটা ব্যাপারটি চেপে যাচ্ছে। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বয়স হয়েছে। অন্যেরা কো মর্বিডিটির শিকার। তারা কোথায় যাবেন? কোন কারন ছাড়াই নিজাম প্যালেস ঘটনার সাথে জামিনকে যুক্ত করার চেষ্টা করছে সিবিআই। মানুষের গণতান্ত্রিক পথে নেমে প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। আর প্রতিবাদ হলেই বিশৃঙ্খলতা হয়, এটাই গণতন্ত্রের মূল্য।”
অবশ্য যুদ্ধের ময়দানে তোপ বর্ষণ করতে ভুলেননি তুষার মেহেতা। তিনি বলেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছিল সেই দিন। সিবিআইকে ভয় দেখানোর জন্য প্রচুর দুষ্কৃতী আনা হয়েছিল। অনেক মন্ত্রী আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন। আইনমন্ত্রী নিজে আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন। বিচারব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করার পূর্ণ কৌশল করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ভার্চুয়ালি আদালতে পেশ করতে হয়েছিল। এত সংখ্যক জমায়েত ছিল যে সিবিআই ঠিকমতো মামলার কাজ করতে পারেনি। তবে এর জবাবে আবারও মনু সিঙঘভি ছক্কা হাঁকিয়ে বলেছেন, “অভিযুক্তদের না জানিয়ে মামলা করা হয়েছে বা নানা কৌশলে জেলে ঢুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে।” দীর্ঘক্ষন সওয়াল জবাবের পর অবশেষে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টোয় শুনানি করার নির্দেশ দিয়েছেন।